কলকাতা: তিনি নির্বাচনের প্রার্থী নন। কিন্তু বহু প্রচারপর্বেরই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থেকেছেন। মঞ্চ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, সব জায়গাতেই স্পষ্টবক্তা। শ্রীলেখা মিত্র। গতকালই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর নম্বর। সঙ্গে রয়েছে কটু মন্তব্য কটাক্ষও! সোশ্যাল মিডিয়াতেই সেই পোস্টের যথাযথ উত্তর দিয়েছেন তিনি। এর আগেও রাজ চক্রবর্তী, তনুশ্রী চক্রবর্তী, পায়েল সরকারের মত তারকা প্রার্থীদের নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া নিয়ে শোরগোল হয়েছিল। বিরক্ত হয়ে অনেকেই ফোন বন্ধ রেখেছিলেন। তবে শ্রীলেখার অভিজ্ঞতা একটু অন্য।


গতকালই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লেখা হয়েছিল, 'ভাত চাই, শ্রীলেখা মাসিকে কল করুন।' এই পোস্টের সঙ্গেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল শ্রীলেখার নম্বর। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি ওই ব্যক্তি। অভিনেত্রীকে রীতিমতো কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ব্যক্তিকে 'বোনপো' সম্মোধন করে পাল্টা পোস্ট করেন অভিনেত্রীও। সেখানে তিনি লেখেন, 'ভাত কেন, কোভিড সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে সাহায্য লাগলে বলো। মাসি যথাসাধ্য সাহায্য করবে।' এবিপি লাইভে শ্রীলেখা বলছেন, 'আমি সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানিয়েছি। নম্বরও বদলাব। ইতিমধ্যেই প্রচুর ফোন এসেছে। তবে তৃণমূল বা বিজেপির সদস্য সমর্থক, যাঁরাই ফোন করুক না কেন, কেউ কটুমন্তব্য করেননি। অনেকে ফোন করে আমায় সাবধান করেছেন। বলেছেন, আপনার নম্বরটা ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে আবার ফোন ধরে বলেছেন জয় শ্রী রাম। আমিও তাদের বলছি, লাল সেলাম। আসলে সবাই বুঝেছে আমি কোনও মতলব নিয়ে দলটা করি না। হয়ত সে জন্যই অভদ্রতা করেননি।'


আগামীকাল হাইভোল্ডেজ নির্বাচনের ফল ঘোষণা। সংযুক্ত মোর্চার ফলাফল নিয়ে কতটা আশাবাদী শ্রীলেখা? অভিনেত্রী বললেন, 'সারাদিন শুনছি, তৃণমূল-বিজেপির মিছিলে হামলা হচ্ছে। আমাদের মিছিলে কোনও হামলা হয়নি। যেখানেই প্রচারে গিয়েছি অভ্যর্থনা পেয়েছি। আমার মনে হয়, এবার বামেদের ফেরা উচিত। সেটা না হলে বামেদের হার নয়, মানুষের হার হবে।' করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেন, খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থা, বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছেন রেড ভলিন্টিয়ার্সরা। শ্রীলেখা বলছেন, 'এক টাকার বাজার থেকে শ্রমজীবী ক্যান্টিন, করোনার প্রথম ধাক্কা থেকেই বামপন্থীরা রাস্তায় নেমে কাজ করছেন। এখন মানুষের চোখ খুলেছে। শুধু সাধারণ মানুষ কেন, এবিপি আনন্দর অনুষ্ঠানে এসে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন অপরাজিতা আঢ্য। কোভিড পরিস্থিতিতে আত্মীয়ের চিকিৎসার জন্য তাঁকে দেবদূত ঘোষের সাহায্য নিতে হয়েছিল, স্বীকার করেছেন সেই কথাও। এতজন থাকতে দেবদূত ঘোষ কেন? কারণ মানুষ জানেন রেড ভলেন্টিয়ার্স কাজ করছে।' 


সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা কালে যোগাযোগের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। বাদ যাননি শ্রীলেখাও। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া ওয়াল জুড়ে দেখা যাচ্ছে প্রয়োজনীয় নম্বর। কেউ কোনও সমস্যায় পড়ে ট্যাগ করলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন শ্রীলেখা। বললেন, 'আমি এর আগে অনেকবার শ্রমজীবী ক্যান্টিনে গিয়েছি। আর্থিক সাহায্যও করেছি। করোনা পরিস্থিতিতে রক্তের অভাব দেখেছি আগেরবার। ইতিমধ্যেই ২ বার রক্ত দিয়েছি আমি। আগামী ৫ তারিখও আবার রক্ত দেব। এছাড়া ভার্চুয়ালি যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি যোগাযোগ করে মানুষকে সাহায্য করার।'


সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপির একগুচ্ছ প্রার্থীদের ফোন নম্বর। অনেকেই অবিরাম কলে বিরক্ত হয়ে বন্ধ রেখেছেন ফোন। কেউ বা নম্বর বদলেছেন। এই নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্কও.. থামিয়ে দিয়ে শ্রীলেখা বললেন, 'আমি সত্যি তৃণমূল-বিজেপি প্রার্থীদের কোনও খবর রাখতে চাই না। তার থেকে দিল্লিতে কার অক্সিজেন লাগবে সেটা জানাটা বেশি জরুরি। যদি সাহায্যের হাতটা বাড়িয়ে দিতে পারি।'