কলকাতা: জ্ঞান হওয়া থেকেই যেন তাঁর জীবন জড়িয়ে গিয়েছিল সঙ্গীতের সঙ্গে। বাবা ছিলেন তামিল সঙ্গীত পরিচালক। মাত্র ৪ বছর বয়স থেকেই বাবার স্টুডিওতে কি-বোর্ড বাজাতে শুরু করেন তিনি। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে বদলে যায় তাঁর জীবন। সংসারে আর্থিক অনটন, বাবার বাদ্যযন্ত্র ভাড়া দিয়েই পেট চলত তাঁদের। কিছুদিন পর সংসার চালাতে নিজেই কাজ শুরু করেন তিনি, সেই থেকেই গানকে পেশা করে নিয়েছিলেন এ আর রহমান (A R Rahman)। আর তারপর সেই গান, সেই সুরের সাধনাই তাঁকে এনে দেয় বিশ্বজোড়া খ্যাতি। অনেকেই বলেন মাঝরাতে কাজ করতেই ভালবাসেন রহমান, তাঁর কাজের ধরনই তাই। আর এই প্রসঙ্গেই সুরকারের জন্মদিনে সঙ্গীতশিল্পী অলকা ইয়াগ্নিক জানান তাঁর এক মজার অভিজ্ঞতার কথা।
একটি ছবিতে গানের জন্য পরিচালক সুভাষ ঘাইয়ের (Subhas Ghai) নির্দেশে একবার এ আর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ছিল অলকা ইয়াগ্নিকের। কল টাইম ছিল রাত্রি ৯ টা। সুভাষ এবং অলকা দুজনেই নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে গিয়েছিলেন সময়মত। কিন্তু রহমানের দেখা নেই। রাত বাড়তে থাকে। শেষে গভীর রাতে ২টো নাগাদ এসে উপস্থিত হন এ আর রহমান। আর মশার কামড়ে তখন হিমসিম খাচ্ছেন দুজনে।
অলকা এ প্রসঙ্গে জানান, 'তাল' (Taal) ছবিতে সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন এ আর রহমান আর তাঁর সুরেই গান গাওয়ার কথা ছিল অলকার। সেবারই টানা ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছিলেন এ আর রহমান। রাত বাড়তে থাকলে সুভাষ ঘাইকে ফোন করে তিনি বলেছিলেন তাঁর গলা এবার হয়ত আর কাজ করবে না। আর তারপরেই হাজির হন এ আর রহমান (A R Rahman)। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেন এই সদ্য ঘুম থেকে উঠে এলেন। কাজের একেবারে তুঙ্গে ছিলেন তিনি। মুখে সবসময় হাসি লেগেই আছে। 'তাঁর সামনে বসে তাঁকে দেখে একটা অদ্ভুত স্নিগ্ধ অনুভূতি হচ্ছিল', বলেন অলকা।
তারপর শুরু হয় গানের পালা। দু-তিনবার গান গাওয়ার পরে নতুন করে সুর সাজিয়ে গাইতে বলেন এ আর রহমান। রাত তখন তিনটে পেরিয়ে গিয়েছে। শেষে ভোর চারটের সময় সেই গান রেকর্ড হয়। চারিদিকে কোনও শব্দ ছিল না, লোকজনের আওয়াজ ছিল না, ফোন বেজে উঠছিল না। নিবিড় শান্তি।
আরও পড়ুন: Tanishaa Mukherji: বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন তনিশা, কী বললেন তিনি