মুম্বই: সঞ্জয় দত্তের বায়োপিক নিয়ে কাজ করতে গিয়েই এতই মজে গিয়েছেন রাজকুমার হিরানি, যে মুন্নাভাই থ্রি করা তিনি আপাতত বন্ধ রেখেছেন। চলুন, দেখে নিই সেই ১০টি তথ্য যা সঞ্জয়ের জীবনকে এত রোমাঞ্চকর, কৌতূহলপ্রদ করে তুলেছে।

১. জানেন কি, বিখ্যাত শুনো গর সে দুনিয়াবালোঁ গানটি দস নামে একটি ছবির জন্য লেখা হয়? ৯৭-এর সেই ছবিটি সঞ্জয় ও সলমন খানের করার কথা ছিল। কিন্তু পরিচালকের হঠাৎ মৃত্যুতে অসম্পূর্ণ থেকে যায় ছবিটি।

২. সঞ্জয় দারুণ তবলা বাজাতে পারেন। আমেরিকায় এক কনসার্টে সেরা এয়ার গিটারিস্ট হিসেবে সোনার মেডেল পান তিনি।

৩. জেলে খাটাখাটনির পারিশ্রমিক হিসেবে ৪৫০ টাকা পান সঞ্জয়। জেল থেকে বেরিয়ে ওই টাকা তিনি তুলে দেন স্ত্রী মান্যতার হাতে।



৪. সুভাষ ঘাইয়ের সুপারহিট ছবি হিরো-র জন্য সঞ্জয়ই ছিলেন ফার্স্ট চয়েস। লমহে-তেও তাঁকেই প্রথমে বাছা হয়েছিল। কিন্তু ড্রাগের নেশার কারণে দুটি ছবি থেকেই বাদ পড়েন তিনি।



৫. সঞ্জয়ের নাইজিরীয় ভক্তরা তাঁর নাম দিয়েছেন ড্যান বাবা মাই লাসিন। অর্থ, লাইসেন্স থাকা গুন্ডা।

৬. সঞ্জয়ের সঙ্গে রকি-তে তাঁর নায়িকা টিনা মুনিমের রোম্যান্টিক সম্পর্ক ছিল। একবার সঞ্জয় নাকি ঋষি কপূরকে এ জন্য মারতেও গিয়েছিলেন। তাঁর সন্দেহ ছিল, ঋষির সঙ্গে টিনার সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ঋষির স্ত্রী নীতু তাঁকে বোঝান, এই সন্দেহ মিথ্যে। সঞ্জয়ের সঙ্গে প্রেম বাঁচিয়ে রাখতে টিনা বহু ছবির অফার প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু সঞ্জু ড্রাগের নেশা কাটাতে না পারায় টিনা বেরিয়ে আসতে বাধ্য হন এই সম্পর্ক থেকে।

৭. ২০০৯ লোকসভা ভোটে সমাজবাদী পার্টির হয়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবারকে প্রচণ্ড চটিয়ে দেন সঞ্জয়। গোঁড়া কংগ্রেস পরিবারের ছেলে হয়ে তাঁর এই সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন বোন ও কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়া দত্ত। বলেন, বাবা সুনীল দত্ত যে ছেলের এই কাণ্ড দেখার জন্য বেঁচে নেই, সে জন্য এই প্রথম ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন তিনি। যদিও ৯৩-র মুম্বই বিস্ফোরণে জড়িত থাকার জন্য সুপ্রিম কোর্ট ভোটে লড়তে দেয়নি তাঁকে।



৮. ছোট থেকে ড্রাগ নিতেন সঞ্জয়। নিজেই স্বীকার করেছেন, এমন কোনও ড্রাগ নেই, যা তিনি পরখ করেননি। একবার এলএসডি-তে বুঁদ সঞ্জয় দেখেন, বাবা সুনীল দত্তের মাথা থেকে আগুন বার হচ্ছে। বাবার মুখ গলে যাবে ভয়ে তিনি আগুন নেভাতে তাঁর ওপর লাফিয়ে পড়েন।

৯. যৌবনের বড় সময় ড্রাগে আচ্ছন্ন থেকেছেন সঞ্জয়। একবার নেশা কেটেছিল পাক্কা দু’দিন পর। সব কিছু হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরে বাবাকে বলেন নিজের অসহায়তার কথা। বাবা তাঁকে আমেরিকায় রিহ্যাবে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সঞ্জয় নিজেই নেন তাঁর জীবনের সব থেকে দৃঢ় সিদ্ধান্ত। দেশে ফেরার পর তাঁর ড্রাগ পেডলার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসে। তাকে দেখে সঞ্জয় চমকে যান, কারণ তিনি যে ফিরছেন, কেউ জানত না। দরজা খুলতেই সে বলে, তার কাছে নতুন কিছু জিনিস আছে, তিনি নেবেন কিনা। সেই মুহূর্তে সঞ্জয়কে সিদ্ধান্ত নিতে হত, জীবনকে নিয়ে তিনি ঠিক কী করবেন। সঞ্জয় জানান, তিনি নেবেন না।



১০. নিজের শরীরকে ছবির ক্যানভাসের মত দেখেন সঞ্জয়। শরীরময় তাঁর ট্যাটু। মা নার্গিসের নাম লেখা আছে বুকে, উর্দুতে। বাবা সুনীল দত্তের নাম দেবনাগরীতে। ভগবান শিব, আগুন নিঃশ্বাস নেওয়া ড্রাগন, জাপানিতে লেখা সম্মান, তিব্বতি শ্লোক, দু’জন সামুরাই যোদ্ধা, একটি বিশাল সিংহ- কী নেই তাঁর শরীর জুড়ে!