কলকাতা: একের পর এক কুরুচিকর মন্তব্য, মিম, এমনকি মৃত্যুকামনাও! সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিং আর কুমন্তব্য জর্জরিত বাংলা ধারাবাহিকের জনপ্রিয় মুখ শ্রুতি দাস। বাধ্য হয়েই লালবাজারের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ৭ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
ছোটপর্দায় যাত্রা শুরু 'ত্রিনয়নী' ধারাবাহিকের প্রধান চরিত্র হয়ে। এরপর একের পর এক নতুন চরিত্রে সুযোগ পাওয়া। কাটোয়া থেকে আসা মেয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে পা জমিয়েছিল অভিনয়ের জোরেই। ভালোবাসা পেয়েছেন, তবে বিতর্ক সহ্য করতে হয়েছে অনেক বেশি। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, সম্পর্ক থেকে শুরু করে গায়ের রঙ, সবকিছুতেই নেটদুনিয়ায় তুলোধোনা তাঁকে। ২ বছরের লাগাতার কটাক্ষ আর কুমন্তব্য সহ্য করতে না পেরে সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করলেন বাঙালি অভিনেত্রী শ্রুতি দাস।
আপাতত 'দেশের মাটি' ধারাবাহিকে 'নোয়া'-র চরিত্রে অভিনয় করছেন শ্রুতি। ধারাবাহিক ও চরিত্রের পরিবর্তন হলেও তাঁর পিছু ছাড়েনি গায়ের রঙ নিয়ে কটাক্ষ। এই ধারাবাহিকে কাজ করার সময়ই একবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শ্রুতি। তাঁর অসুস্থতার খবর শুনে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুকামনা পর্যন্ত করেছিলেন একদল নেটাগরিক। সেসময় শ্রুতির পাশে দাঁড়য়ে তাঁকে সমর্থন করেছিলে তাঁর সহকর্মীরাই। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের খারাপ লাগার কথা জানালেও সেসময় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা ভাবেননি শ্রুতি।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রথম সারির চ্যানেলের পেজে শ্রুতিকে নিয়ে কুমন্তব্য করেন এক মহিলা। বিষয়টি শ্রুতিরও নজরে আসে। খোঁজ নিয়ে তিনি জানেন, ওই মহিলা কাটোয়ারই বাসিন্দা। যে কাটোয়া থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর পথ চলা, সেই শহরের বাসিন্দায় শ্রুতির বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করছেন! বাধ্য হয়েই পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ জানান শ্রুতি। ওই মন্তব্য়ের ক্রিনশট পোস্ট করে সাইবার সেলকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান অভিনেত্রী।
গত বৃহস্পতিবারই পুলিশের কাছে ৭জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ জানান শ্রুতি। শনিবার, লালবাজারের আধিকারিকরা কথা বলেন শ্রুতির সঙ্গে। এরপরই, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে, তথ্য প্রযুক্তি আইন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হুমকি, ভয় দেখানো, অনুসরণ, শ্লীলতাহানি সহ একাধিক অভিযোগে মামলা রুজু হয়। ওই ৭জন অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ জানানোর কথাটি পোস্ট করেছিলেন শ্রুতি। অভিনেত্রীর মতে, ' সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক মন্তব্য চোখে পড়ে যেগুলি গায়ের রঙ বা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে করা। সবচেয়ে বড় কথা, বেশিরভাগ সময়েই এর কোনও প্রতিবাদ হয় না। আমার মনে হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের মন্তব্য যাতে বন্ধ হয় তার জন্য নির্দিষ্ট আইন থাকা উচিত।'