মুম্বই:  বৃহস্পতিবার শাহরুখ খানের প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ লাগোয়া একটি ক্যান্টিন ভেঙে দিয়েছে বম্বে পুরসভা। পশ্চিম মালাডে অফিস লাগোয়া ওই ক্যান্টিনটি অবৈধ ভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। বম্বে পুরসভার কর্মীদের তরফে জানানো হয়েছে একটি খোলা ছাদকে ঢেকে ক্যান্টিনে পরিণত করেছিলেন শাহরুখ। যেকোনও সময় সেখানে আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেই জন্যে বেআইনি ওই নির্মাণটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


প্রসঙ্গত, শাহরুখ এবং তাঁর স্ত্রী প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্টের যৌথ মালিক। তাঁরা মালাডের সুন্দরনগরে ১৬ তলার ডিএলএইচ বিল্ডিংয়ের পুরো চতুর্থ তলটি অফিস চালানোর জন্যে ভাড়া নিয়েছেন। সেখানেই পোস্ট প্রডাকশনের যাবতীয় কাজকর্ম হয়। ওই তলেই অফিস লাগোয়া একটি দু হাজার স্কোয়ার ফিটের ছাদ ঘিরে ফেলে ক্যান্টিনে পরিণত করেছিলেন শাহরুখ। মূলত অফিসের ৩১৬ জন কর্মী এবং অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা বাইরের লোকেরাও সেই ক্যান্টিনে যেতে পারতেন। সেই ক্যান্টিনটিই ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনা সম্পর্কে রেড চিলিজ-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, রেড চিলিজ ভিএফএক্স ওই সম্পত্তির মালিক নয়। তারা ওই তলটি ভাড়া নিয়েছিল। বিল্ডিং লাগোয়া ওই খোলা ছাদটি মূলত অফিসের কর্মীরা বসে খাবার খাওয়ার জন্যে ব্যবহার করতেন। সেখানে সেই হিসেবে কোনও ক্যান্টিন ছিল না, দাবি রেড চিলিজের ওই মুখপাত্রের। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝি বশত, বম্বে পুরসভা যে নির্মাণটি ভেঙে দিয়েছে, সেখানে সোলার প্যানেল ছিল। সেখান থেকেই ভিএফএক্স বিভাগে সৌর শক্তি সরবরাহ হত। রেড চিলিজ ভিএফএক্স পুরো বিষয়টি পুরসভার উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নজরে আনবে বলে জানা গিয়েছে।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে মিউনিসিপাল কমিশনার এবং ওয়ার্ড অফিসার চন্দা যাদবের দাবি, ওই ছাদটি খোলা রাখতেই হবে। কিন্তু রেড চিলিজ সেটা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছিল। এরফলে বিঘ্নিত হচ্ছিল অগ্নি নির্বাপন সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়ম ।

তবে এই প্রথম কোনও তারকার সম্পত্তিতে হাত লাগাল বম্বে পুরসভা এমন নয়। এরআগে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে রানি মুখোপাধ্যায় এবং সোনি সুদকে। দুজনেই বেআইনি ভাবে নিজেদের বাড়ি এবং রেস্তোরাঁর ভেতরে নির্মাণ করেছিলেন।

এক সমাজকর্মীর দাবি, বম্বে পুরসভা ইচ্ছাকৃত ভাবে তারকারদের নির্মাণই ভাঙে বাড়তি প্রচার পাওয়ার জন্যে। বাস্তবে তারা বহু বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কোনও পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। সমাজকর্মীর এই দাবি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে পুর কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, এবছর জুলাইয়ে শাহরুখের বিরুদ্ধে এই বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ আসে পুরসভার কাছে। সেখানে গিয়ে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে পুরকর্মীরা দেখে মালাডের ওই বিল্ডিংয়ে আইন ভেঙে একাধিক নির্মাণ করেছেন শাহরুখ। পুর কর্তৃপক্ষ যাতে ভেঙে দিতে না পারেন সেই জন্যে আদালতে স্টে-অর্ডারের আর্জি জানিয়েছিলেন শাহরুখের আইনজীবী। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত। এরপরই ওই নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুর কর্তৃপক্ষ।