টোকিও: ফের প্রশ্নের মুখে জাপানের কর্মসংস্কৃতি। সম্প্রতি সেদেশের লেবার ইন্সপেক্টর এক ৩১ বছর বয়সি জাপানি মহিলার মৃত্যুর কারণ হিসেবে বাড়তি কাজের চাপকে দায়ী করেছে। সেই মহিলা জাপানের সরকারি পাবলিক ব্রডকাস্টিং সংস্থা এনএইচকেতে কর্মরত ছিলেন। মিয়া সাদো নামের ওই মহিলা এনএইচকে-র হেডকোয়ার্টার টোকিওতেই কাজ করতেন। সূত্রের খবর, তিনি কর্মক্ষেত্রে একমাসে প্রায় বাড়তি ১৫৯ ঘণ্টা ছিলেন। মাসে মাত্র দুটি অফ ডে নিয়েছিলেন। যার জেরে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। বিভিন্ন রিপোর্ট খতিয়ে দেখে দাবি জাপানের লেবর ইন্সপেক্টরের।
টোকিও লেবর স্ট্যান্ডার্ড অফিস ২০১৩ সালে মহিলার মৃত্যুর কারণ হিসেবে বাড়তি কাজের চাপকে দায়ী করলেও, সেই খবর প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতিই। প্রসঙ্গত, সাদোর মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আসায় চাপে জাপানের বহু সংস্থাই। কারণ, সেখানে কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়, যা অনেক সময়ই তাঁদের শারীরিক ভাবে অসুস্থ করে দেয়।
তবে শুধু মিয়া সাদো নন, এরমধ্যে আরও এক তরুণ কর্মীর এই বাড়তি কাজের চাপের কারণে মৃত্যু হয়েছে জাপানে। সেই তরুণ দেঁতসু নামের এক বিজ্ঞাপন সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। সেই ঘটনার পর থেকে কার্যত কাঠগড়ায় জাপানের কর্মসংস্কৃতি। তারপর থেকেই একাধিক বিতর্কসভায় জাপানে যে বাড়তি সময় কাজ করার সংস্কৃতি রয়েছে, সেটা বন্ধের পরামর্শ আসে। মাৎসুরি তাকাহাসি নামের ২৪ বছর বয়সি এক তরুণী ২০১৫ সালের এপ্রিলে আত্মহত্যা করেন, কারণ কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কাটানোর ফলে তিনি ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলেন। মাৎসুরি মৃত্যুর আগের মাসে চাকরিক্ষেত্রে বাড়তি একশো ঘণ্টা কাটিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ২০১৫ সালের ক্রিসমাসের আগের রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার শেষ পোস্টে লেখা ছিল আমি মরে যেতে চাই। আমি মানসিক এবং শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত।
এই ঘটনার পরই প্রশ্নের মুখে চলে আসে জাপানের কর্মসংস্কৃতি। সেখানে হামেশাই কর্মীদের একাগ্রতা বুঝতে তাদের দিয়ে ওভারটাইম করানো হয়। কিন্তু সেটা আদও কর্মীদের সৃষ্টিশীলতা বাড়ায় কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। এরপরই সেখানকার সরকার সংস্থাগুলোর জন্যে ১০০ ঘণ্টার বেশী কর্মীদের দিয়ে ওভারটাইম করালে জরিমানার নিয়ম চালু করে। কিন্তু তাতেও সমস্যার তেমন কোনও সমাধান হয়নি বলে দাবি বিশেষজ্ঞ মহলের। সমীক্ষা বলছে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় দুহাজার জাপানি বাড়তি কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে মারা গিয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে বাড়তি কাজের চাপ, একমাসে ১৫৯ ঘণ্টা ওভারটাইম, মৃত্যু জাপানি মহিলার
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
06 Oct 2017 07:43 AM (IST)
ফাইল চিত্র
NEXT
PREV
আন্তর্জাতিক (world) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -