কলকাতা: সেকাল আর একালের বিস্তর ফারাক। তিনি যেমন করে তাঁর মা-কে পেয়েছেন, এখন হয়তো সেই ছক অনেকটাই অচেনা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো কিছুটা বদলে গিয়েছে জীবন যাপনের ধাঁচ, কিন্তু ভালবাসা? তাতে কখোনোই খাদ মেশে না বলেই বিশ্বাস করেন তিনি। চঞ্চল চৌধুরী (Chanchal Chowdhury )। তাঁর কাছে রোজই মাতৃদিবস। যে মানুষটা তাঁকে ঘিরে রেখেছে জীবনভর... তাঁর কথাই এবিপি লাইভকে বলতে গিয়ে স্মৃতিতে ভাসলেন, ডুবলেন চঞ্চল।
আট ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন চঞ্চল। ছোট থেকে উপলদ্ধি করেছেন মাকে, মায়ের জীবনযুদ্ধকে। চিরকাল তাঁকে ছুঁয়ে গিয়েছে মায়ের নিজের সবকিছু ত্যাগ করে সন্তানকে বড় করে তোলার সেই প্রচেষ্টা। অভিনেতা বলছেন, 'আমাদের মায়েদের প্রজন্মের একমাত্র লক্ষ্যই বোধহয় ছিল সন্তানদের ভালভাবে বড় করে তোলা। আর তার জন্য নিজের সবকিছু ত্যাগ করে দিতে, নিজের শখ-সাধ সব বিসর্জন দিতে দু'বার ভাবতেন না। আর হ্যাঁ.. এই সবটাই ছিল ভীষণ একতরফা। কখনও চাওয়া পাওয়ার হিসেব করতেন না মা। আমাদের প্রজন্ম হয়তো অজান্তেই কিছু প্রত্যাশা করে ফেলি। মা কখনও বোধহয় এই হিসেবটা করে উঠতেই পারেননি। এখনও যদি মা-কে বলি কিছু লাগবে.. মা মুখ ফুটে কখনও কিছু চাইতে পারেন না। এখন চাওয়া পাওয়ার জগতে প্রবেশ করে বুঝি.. মা সর্বংসহা, মা দুর্গা। সবটা আগলে রেখেছেন। সব মায়েরই বোধহয় এমনই হন যুগে যুগে।'
পড়াশোনা থেকে শুরু করে কেরিয়ার.. মা সবসময় পাশে ছিলেন চঞ্চলের। অভিনেতা বলছেন, 'আমার বাবা শিক্ষক ছিলেন। মায়ের প্রথাগত শিক্ষা খুব বেশিদূর না হলেও আমার চোখে উনি একজন ভীষণ শিক্ষিত মানুষ। শিক্ষা শুধু প্রথাগত হয় না, জীবন থেকে, বাস্তব পরিস্থিতি মানুষকে অনেক বেশি শিখিয়ে দিয়ে যায়। সন্তানেরা মানুষ হোক, এর জন্য সমস্ত কিছু ত্যাগ করে দিতে পারতেন তিনি। যোগ্যতা দিয়ে মানুষকে বিচার করা যায় না, বিচার করা উচিত মানসিকতা দিয়ে। ছোটবেলায় মনে আছে, আমি পড়াশোনা করতাম। মা পাশে বসে থাকতেন। হয়তো সবটা বুঝতেন না, কিন্তু সারাক্ষণ পাশে বসে থাকতেন। আমার কাছে এটাই মা, এটাই প্রেরণা।'