কলকাতা: ছবির শ্যুটিং চলছে শান্তিনিকেতনে। ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে চারিদিক। ভোরবেলা গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়া শ্যুটিং করতে। ছবির প্রয়োজনে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক থালা ভাত। দুপুরে সেই ভাত খাওয়ার শট দিতে গিয়ে অভিনেত্রী দেখেন, পুরো খাবারটা পচে গিয়ে তার ওপর মাছি মরে পড়ে আছে। অথচ, চিত্রনাট্য অনুযায়ী, সেই খাবার খেতে হবে ৩ দিন না খেয়ে থাকা মানুষের মতো! মরা মাছিটা ফেলে দিয়ে ওই পচে যাওয়া ভাত গোগ্রাসে খেতে লাগলেন অভিনেত্রী! শট ওকে! অনেকগুলো বছর পেরিয়েও সেই অভিজ্ঞতা ভুলতে পারেননি চান্দ্রেয়ী ঘোষ (Chandreyee Ghosh)!


ক্যামেরার পিছনে রয়ে যায় এমনই কত গল্প! ২১ বছরে প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ভারি হয়েছে অভিজ্ঞতার ঝুলিও। এবিপি লাইভকে নতুন ছবির গল্প শোনাতে শোনাতে ফেলে আসা ২১ বছর ফিরে দেখলেন অভিনেত্রী চান্দ্রেয়ী। সামনেই মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন দুটি ছবি, 'মুক্তি' আর 'রীষ'। দুটি ছবিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি চরিত্রে কাজ করেছেন অভিনেত্রী। 


২১ বছরের অভিনয় জীবনে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন চান্দ্রেয়ী। এমন কোনও চরিত্র রয়েছে যেখানে অভিনয় করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর? চান্দ্রেয়ী বললেন, 'আমায় প্রায় সবরকম চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ দিয়েছে ইন্ডাস্ট্রি। খুব ভালোমানুষ থেকে শুরু করে, চোর, বাইজী, পুলিশ সব চরিত্রে অভিনয় করা হয়ে গিয়েছে। কখনও মনে হয়নি এক ধরনের কাজই করে যাচ্ছি। তবে হ্যাঁ, আমার একটা খুব প্রিয় ছবি আছে, 'স্প্লিট'। সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র একটি ছবিতেই ২৪ রকম চরিত্রে অভিনয় করেছিল। তেমন কোনও ছবির কাজ করতে পারলে দারুণ হবে।'


আরও পড়ুন: চেষ্টা করেছি একটা মেয়ের বাড়ি ছাড়ার আবেগকে ফুটিয়ে তুলতে, বলছেন 'গুড়িয়া রানি' প্রিয়ঙ্কা


অভিনয় করতে গিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন অভিনেত্রী। তবে সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে বোলপুরের দুটো ঘটনার কথা। চান্দ্রেয়ী বলছেন,' ছবির শ্যুটিং চলছিল শান্তিনিকেতনে। ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে চারিদিক। ভোরবেলা গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়তাম শ্যুটিং করতে। একটা বাড়িতে শ্যুটিং চলছে তখন। দৃশ্যটা ছিল, আমি ৩ দিন খেতে পাইনি। তারপর আমায় ভাত দেওয়া হয়েছে। সেই তিনদিন না খেতে পাওয়া মানুষের মতো করেই আমায় খেতে হবে গোটা খাবারটা। শট দিতে গিয়ে দেখি পুরো ভাতটা পচে গিয়েছে। মাছি মরে পড়ে আছে। ওই জনমানবহীন জায়গায় নতুন ভাত কোথায় পাওয়া যাবে! বাধ্য হয়ে মাছিটা ফেলে দিয়ে ওই পচা ভাতই গোগ্রাসে খেলাম।'


আরও একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে অভিনেত্রীর। ওই একটি শ্যুটিংয়ের ঘটনা। চিত্রনাট্য অনুযায়ী, চান্দ্রেয়ীর দুই পোষ্য। একটা বাঁদর আর একটা কেউটে সাপ। শ্যুটিংয়ের ঠিক আগে, গ্রামের আলপথ থেকে ধরে আনা হল একটা কেউটে সাপ। চান্দ্রেয়ী বলছেন, 'চিত্রনাট্যে ছিল, আমার গায়ে রাগ করে সাপটা ছুঁড়ে দেবে একজন। আর আমি সেই সাপটাকে নিয়ে আদর করে চুমু খাব। সাপের মুখটা সেলোটেপ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছিল। আমিও ক্যামেরার সামনে যথারীতি শট দিলাম। এখন মনে হয়, কি কাণ্ডটাই না করে ফেলেছি ঘোরের মধ্যে! কেউটে সাপের মুখে চুমু! ভালোবাসাাট বুঝছেন! ঘটনাটার একটা নাম করে ফেলা যায় রীতিমতো.. বিষাক্ত চুম্বন..' হাসিতে ফেটে পড়লেন চান্দ্রেয়ী।