চলে গেলেন বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির হি-ম্যান ধর্মেন্দ্র । বহুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন। পরিবার জানিয়েছিল, ধীরে ধীরে ভাল হচ্ছেন তিনি। কিন্তু সোমবার, ২৪ নভেম্বর এল দুঃসংবাদ। চলে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
১৯৬০ সালে বলিউডে ডেবিউ করেন ধর্মেন্দ্র। তাঁর প্রথম সিনেমা 'দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে'। ছয় দশক ধরে মাতিয়ে রেখেছেন চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষের মন। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। 'শোলে' থেকে 'ইয়াদোঁ কি বারাত', 'ফুল অউর পাত্থর' থেকে 'চুপকে চুপকে', 'রাম বলরাম'-থেকে হালফিলের 'রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি', মুগ্ধ করেছেন তিনি। বহু ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ে দাগ কেটেছেন দর্শকদের মনে। আগামী ডিসেম্বরে মুক্তির পাবে ধর্মেন্দ্র অভিনীত শেষ ছবি 'ইক্কিস'। কর্ণ জোহরের ছবি 'রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি'-তেও নজর কেড়েছিল তাঁর অভিনয়।
সিনেমার মতোই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে নানা অধ্যায়। রং বদলেছে তাঁর জীবনের ক্যানভাসও। মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রথম বিয়েকরেছিলেন তিনি। স্ত্রী প্রকাশ কৌর। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও ধর্মেন্দ্রর চার সন্তান। সানি দেওল, ববি দেওল, অজিতা দেওল এবং বিজেতা দেওল। এরপর ১৯৮০ সালে ধর্মেন্দ্র বিয়ে করেন 'ড্রিমগার্ল' হেমা মালিনীকে। এষা দেওল এবং অহনা দেওল ধর্মেন্দ্র-হেমার সন্তান।১৯৬০ সালে ধর্মেন্দ্রর প্রথম ছবি মুক্তির পর পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি প্রায় ২০ টি সিনেমায় অভিনয় করেন। তবে কাঙ্খিত সাফল্য আসে ১৯৬৬ এ। বক্স অফিসে ধর্মেন্দ্রর 'ফুল অউর পাত্থর' সুপার-ডুপার হিট। রিলিজ করার পরই তাঁর ফিল্মি কেরিয়ারগ্রাফ চড়চড় করে চড়তে থাকে। সত্যকাম, শোলে, আঁখে, কর্তব্য-র মত ছবিতে মন কাড়েন তিনি। সহজেই মহিলামহলের হার্টথ্রব হয়ে ওঠেন।
তাঁর রাফ-টাফ ইমেজ আর অ্যাকশন সিকোয়েন্স ছিল বহু ছবির প্রাণ। তাই তাঁকে অনেকেই বলতেন, বলিউডের হি-ম্যান । তাঁর করা অ্যাকশন ছবি মানেই বক্সঅফিসে নিশ্চিত সাফল্য । বডি ডাবল না নিয়েই বহু ছবিতে অ্যাকশন সিকোয়েন্স করেছেন। ২০১২ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত হন ধর্মেন্দ্র।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির ময়দানেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিজেপির টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে জিতে ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত বিকানের-এর সাংসদ ছিলেন তিনি। ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুতে ভারতীয় সিনেমার এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের অবসান হল। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে চিরদিন আলোকিত হয়ে থাকবেন ধর্মেন্দ্র।