মুম্বই: আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে কঙ্গনা রানাওয়াতের একদা অ্যাফেয়ারের গল্প বহু পুরনো। তারপর আরব সাগর দিয়ে ঢের ঢের জল বয়ে গিয়েছে। কঙ্গনা পুলিশে আদিত্যর নামে অভিযোগ করেছেন। অল্পদিন আগে এক সাক্ষাৎকারেও বলেছেন, বাবার বয়সি আদিত্য মারধর করতেন তাঁকে।

আদিত্যও অবশ্য রেয়াত করেননি কঙ্গনাকে। তাঁকে পাগলি আখ্যা দিয়েছেন। 'মিথ্যে' বলার জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগে ২০০৮ সামে এক পত্রিকায় আদিত্য পাঞ্চোলি কঙ্গনা সম্পর্কে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দেন। তাতে অভিযোগ করেন, কঙ্গনা তাঁকে ব্যবহার করেছেন, তাঁর পয়সা নয়ছয় করে প্রেম করেছেন অন্যের সঙ্গে।

আদিত্য বলেন, কঙ্গনার সঙ্গে যখন তাঁর প্রথম দেখা হয় তখন কুইনের নায়িকা কপর্দকশূন্য। সেটা ২০০৪-এর ২৭ জুনের ঘটনা। পথে পথে ঘুরছিলেন কঙ্গনা, বৃষ্টিতে আপাদমস্তক ভিজে। একজনের সঙ্গে বাইকে চেপে বার হচ্ছিলেন অভিনয় শেখার স্কুল থেকে। কঙ্গনাই নিজে এগিয়ে এসে তাঁর সঙ্গে আলাপ করেন।

তারপর থেকে কঙ্গনা নিয়মিত তাঁকে ফোন করতেন, জোরাজুরি করতেন দেখা করার জন্য। বাধ্য হয়ে তিনি দেখা করেন। ছোট শহরের মিষ্টি চেহারার মেয়েটির প্রেমে পড়ে যান তিনি। এরপর কঙ্গনার জন্য তিনি যত দূর করা যায় করেছেন। তাঁর ফোনও ব্যবহার করতেন কঙ্গনা। ৩ বছর ধরে এক বন্ধুর বাড়িতে তাঁরা লিভ ইন করেছেন। তিনি ও কঙ্গনা থাকবেন বলে ইয়ারি রোডে বাড়িও বানাচ্ছিলেন। একদিন কঙ্গনা তাঁকে বলেন, এক যুবক তাঁকে উত্যক্ত করছে। পরে ফোনের বিল হাতে পেয়ে আদিত্যর চক্ষু চড়কগাছ। সেই যুবকের সঙ্গেই তাঁর ফোন থেকে এক মাসে ৫,০০০ মিনিট গল্প করেছেন কঙ্গনা। অথচ এরপরেও সাবধান হননি তিনি। সেই সুযোগে তাঁর নাম ব্যবহার করে কঙ্গনা এমনই এক যুবককে দুবাইতে চাকরি করে দিয়েছেন, যদিও তিনি বিন্দুবিসর্গ জানতেন না।

এরপর শাকালাকা বুম বুমের শ্যুটিং সেরে দুবাই থেকে ফেরার পর কঙ্গনা নাকি আর এক অভিনেতার ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। তাঁর ফোন ঘেঁটে সে কথা জানতে পেরে তাঁকে মারধর করেন আদিত্য। পরে ভাবও হয়ে যায়।

পরে কঙ্গনার বোন রঙ্গোলির মুখে যখন অ্যাসিড ছোঁড়া হয়, তখন সব রকমভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী জারিনা ওয়াহাব তাঁকে সতর্ক করেছিলেন, যে ওই অ্যাসিড ছোঁড়া উন্মাদ তাঁদের পরিবারেরও ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু তা শোনেননি তিনি। রঙ্গোলির প্লাস্টিক সার্জারির জন্য খরচ করেন ১০ লাখ টাকা। এরপরেও কঙ্গনা এক সন্ধেয় তাঁকে ফোন করে যাচ্ছেতাই করে কথা শোনান, তুলনা করেন ওই অ্যাসিড হামলাকারীর সঙ্গে। রেগেমেগে তিনি কঙ্গনার বাড়ি গিয়ে দেখেন, অটোরিকশায় চড়ে পালাচ্ছেন তিনি।

আদিত্যর দাবি, কঙ্গনার পিছনে তিনি জলের মত টাকা খরচ করেছেন, এমনকী বিচ্ছেদের পরেও। বাড়ি কেনার জন্য কঙ্গনা তাঁর কাছে এক কোটি টাকা চান। যদিও এর আগে পুলিশে আদিত্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবুও নিজে গ্যারান্টার হয়ে কঙ্গনাকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাইয়ে দেন তিনি। আর নিজের পকেট থেকে দেন ৫৫ লাখ টাকা। সেই টাকার ৩০ লাখ কঙ্গনা এখনও ফেরত দেননি। এর আগে মুকেশ ভট্ট যখন কঙ্গনাকে ছবি করার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ টাকা দিয়ে পরে তা ফেরত চান, সে টাকাও আদিত্য নিজের পকেট থেকে দিয়েছিলেন।

সে সব টাকা আর তিনি ফেরত চান না। তবে বাড়ি কেনার জন্য কঙ্গনার শোধ না দেওয়ার ৩০ লাখ টাকা ফেরত চান তিনি।