নয়াদিল্লি: কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ নরেন্দ্র মোদি থেকে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীর । এদিন নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্যুইটে লিখেছেন, "সিনেমার কিংবদন্তি হিসেবে দিলীপ কুমারকে সবাই মনে রাখবে। অসাধারণ অভিনয় প্রতিভা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দর্শককে মোহিত করেছে তাঁর অভিনয়। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় সংস্কৃতি জগতের ক্ষতি।"
দিলীপ কুমারের প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "ভারতীয় সিনেমার প্রবাদপুরুষের প্রয়াণে আমি নির্বাক। দিলীপ কুমারজী চলে যাওয়ায় গভীর শোকাহত। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সিনেমায় তাঁর অভিনয় শৈলী বেঁচে থাকবে। সায়রা বানু, পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং তাঁর অসংখ্য অনুরাগীদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।"
দিলীপ কুমারের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, "দিলীপ কুমার একজন প্রতিভাবান অভিনেতা। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। গঙ্গা যমুনার মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় লক্ষ লক্ষ সিনেমাপ্রেমীর মন ছুঁয়ে গিয়েছে। আমি তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।"
ভারতীয় সিনেমায় দিলীপ কুমারের অবিস্মরণীয় অবদান আগামী কয়েক প্রজন্মের স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। ট্যুইটে শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী।
মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। অসুস্থতার কারণে গত এক বছর ধরে তাঁকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। শ্বাসকষ্টের কারণে শেষবার ভর্তি হয়েছিলেন গত বুধবার। রেখে গেলেন স্ত্রী সায়রা বানুকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া সব মহলে।
১৯৪৪ সালে মুক্তি পায় দিলীপ কুমারের প্রথম ছবি ‘জোয়ার-ভাটা’। বক্স অফিসে তেমন ব্যবসা করতে পারেনি ছবিটি। সাফল্য দিলীপের ঝুলিতে আসে ১৯৪৭ সালে মুক্তি পাওয়া জুগনু ছবিতে। বলিউডে নয়া ‘আন্দাজ’ নিয়ে এসেছিলেন দিলীপ কুমার। অল্প সময়েই দর্শকদের মন জয় করে নেয়। জোগান, দীদার , দাগ , দেবদাস থেকে মধুমতির মতো ছবি দিলীপকে এনে দেয় বলিউডের ট্র্যাজেডি কিং-এর তকমা।কোহিনূর এবং রাম অউর শ্যাম-এর মতো কমেডি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন দিলীপ।
১৯৬০ সালে মুক্তি পেয়েছিল মোগল-এ-আজম। দিলীপ-মধুবালার অফস্ক্রিন-অনস্ক্রিন রসায়ন দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। তরানা ছবি থেকে শুরু হয়েছিল দিলীপ কুমার-মধুবালার সম্পর্ক। এই সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল নয়া দউর সিনেমার সময়। মেয়েকে আউটডোর শ্যুটিংয়ে যেতে দেননি মধুবালার বাবা আতাউল্লা খান। নায়িকা বদলে দেন বি আর চোপড়া। মধুবালার বদলে ছবিতে দিলীপের নায়িকা হন বৈজয়ন্তীমালা। ক্ষুব্ধ আতাউল্লা বিষয়টিকে আদালতে নিয়ে যান। আদালতে চোপড়ার পক্ষ নেন দিলীপ। এর পরই দিলীপ-মধুবালার সম্পর্কে ভাঙন ধরে। এই ভাঙনের পর দীর্ঘদিন অবিবাহিত ছিলেন দিলীপ কুমার। ৪৪ বছর বয়সে ২২ বছরের সায়রা বানুকে বিয়ে করেন তিনি। সোশ্যালাইট আসমা সাহিবাকে বিয়ে করেন ১৯৮১ সালে। তবে দুই বছরের মধ্যেই তা ভেঙে যায়। ফের সায়রার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন দিলীপ।