নয়া দিল্লি : বন্দিদশাতেই অশীতিপর স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর প্রতিবাদ বিরোধীদের। রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠালেন সনিয়া গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরিরা। এব্যাপারে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, মিথ্যে মামলা দেওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন। এব্যাপারে অফিসারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বলুন কেন্দ্রীয় সরকারকে।
গতকাল বন্দিদশাতেই মৃত্যু হয় সমাজকর্মী ফাদার স্টান স্বামীর। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। মুম্বইয়ের বান্দ্রার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সন্ত্রাস দমন আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল স্টান স্বামীকে। গত বছর এলগার পরিষদ মামলায় গ্রেফতার হন ৮৪-র এই মানবাধিকার কর্মী। শারীরিক কারণে গত সপ্তাহে জামিনের জন্য নতুন করে বোম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানান স্টান স্বামী।
আদালতকে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি জানান, তালোজা জেলে তাঁর শারীরির অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। যদি তাঁকে অন্তবর্তী জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে শীঘ্রই তিনি মারা যাবেন। তিনি চিকিৎসার আবেদন জানান। এর পাশাপাশি তালোজা জেলে অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথাও তুলে ধরেন। এমনকী করোনা পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ববিধি না মানা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, চিকিৎসা পরিষেবার অভাব ইত্যাদির অভিযোগ তোলেন কারা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। ২৮ মে আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। ভেন্টিলেটরে ছিলেন। এরই মধ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। গতকাল তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ ১০ বিরোধী নেতা রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লেখেন। সনিয়া গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, এইচ ডি দেবগৌড়া, এমকে স্ট্যালিন, হেমন্ত সোরেন, ডি রাজা, ফারুক আবদুল্লাহ ও তেজস্বী যাদব-রা চিঠি লেখেন। তাঁদের বক্তব্য, অতিরিক্ত বন্দী থাকা তালোজা জেলে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর ফাদার স্ট্যান স্বামীকে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করার জন্য একাধিকবার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু, তাতে কর্ণপাত করা হয়নি।
এদিকে স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে মোদি সরকার। মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে ট্যুইট করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাদের বক্তব্য, বিনা বিচারে দীর্ঘদিন বন্দি থাকার পর মৃত্যু হয়েছে স্ট্যান স্বামীর। ৮৪ বছরের মানবাধিকার কর্মীর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত ও উদ্বিগ্ন। যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়া যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হোক। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মুক্তি দিক সব রাষ্ট্র।