কলকাতা: ছোটবেলা থেকেই নাচ-গানের মধ্যে বড় হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী প্রস্মিতা পাল। তাই ছেলেবেলার পুজোর স্মৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে নাচ-গানের রিহার্সালের দিনগুলো। ছোটবেলার পুজোটাও অনুষ্ঠান করেই মূলত কাটাতেন, এবিপি লাইভকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন গায়িকা।


'পুজোর এক-দেড় মাস আগে থেকে আমাদের শুরু হত রিহার্সাল। নানারকম গান, নাচ, নৃত্যনাট্য় সবকিছুর মহড়া চলত জোরকদমে। এরপর টেক রিহার্সাল, স্টেজ রিহার্সাল, ড্রেসারের সঙ্গে রিহার্সাল করে কাটত। ওই কটা দিন খুব আনন্দে থাকতাম। আর পুজোর পাঁচ দিন, মা-বাবার থেকেও রেহাই। পড়াশোনা নিয়ে কেউ খুব একটা বকাঝকা করত না,' বালিগঞ্জ এলাকার দুর্গাবাড়িতে কাটানো ছেলেবেলার পুজোর কথা বলতে গিয়ে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন প্রস্মিতা। এই সবকিছুর সঙ্গে ছিল দুর্গাবাড়ির বিখ্যাত ঢাকের আওয়াজ। অষ্টমীর অঞ্জলি, আরতি, তারপর ঢাকের তালে নাচ মাস্ট ছিল। 


ছোটবেলার পুজো একেবারে আলাদা একটা অনুভূতি প্রস্মিতার কাছে। কেন? 'ওই পুজোগুলো বন্ধুদের সঙ্গে কাটত। পুজোয় অনেক নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে আলাপ হত, বন্ধুত্ব হত। সেই বন্ধুত্বগুলো এখনও থেকে গেছে।'


প্রস্মিতার কথায়, ছোটবেলার পুজোর অনুষ্ঠানে অনেক বেশি সারল্য ছিল। গোটা ব্যাপারটা প্রচণ্ড একটা ভালবাসা আর টান থেকে আসত। এখনকার অনুষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই প্রোফেশনাল। 'সেই ইনোসেন্সের সঙ্গে অনুষ্ঠান করাটা খুব মিস করি। এই ব্যাপারটা এখন আর পাওয়া যায় না,' বলছেন গায়িকা। 


আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর সময় বাড়িতে লুকিয়ে নাগরদোলা চড়তে গিয়েছিলাম: অরুণিমা


পুজোর অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে বিব্রতও হয়েছেন গায়িকা। তবে ছোট ছিলেন বলে অতটা প্রভাব পড়েনি। প্রস্মিতার মতে, 'যাঁরা মঞ্চে নাচ করেন তাঁদের সকলকেই প্রায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে মনে হয়। একদম ছোটবেলায়, আমার তখন খুব বেশি হলে ৬ বছর বয়স। 'দুষ্টু রাজা' নাটক করতে গিয়ে স্টেজে এমন বিভোর হয়ে নাচ করেছি যে কস্টিউমটাই খুলে গিয়েছিল। তবে ছোটবেলায় যা হয়, বাচ্চারা যাই করে ভাল লাগে। সেটাও তখন মার্জনা করে দেওয়া হয়েছিল।'


পুজোর প্রেম এসেছিল? গায়িকার বলেন, 'পুজোয় প্রেম কার আসেনি? যদিও পুজোয় প্রেম করতে গিয়ে আমার জন্য আমার দিদি বাড়িতে কেস খেয়েছিল। কারণ দিদির বন্ধুর সঙ্গেই আমি চুটিয়ে প্রেম করছিলাম। দুর্গাবাড়িতেই আমাদের প্রেম শুরু। এবার আমার বাড়ির লোক দেখেনি, কিন্তু দিদির বাড়ির লোক ব্যাপারটা দেখে নেন। ফলে ও প্রচণ্ড বকাঝকা খেয়েছিল। গোটা পুজোয় ওকে আর বাড়ি থেকে বেরোতেই দেওয়া হয়নি। গোটা পুজোটা মাটি হয়ে গিয়েছিল।'


তবে পেশাগতভাবে গান-বাজনা করার পর থেকে পুজোয় অনুষ্ঠান করে কেটেই যায়। সেই অর্থে পুজো উপভোগ করা যায় না। যদিও প্রস্মিতার কথায়, 'বলতে নেই, তবে এই অতিমারীর জন্যই গত বছর পুজোটা উপভোগ করতে পেরেছি, নয়তো শো-তেই কেটে যায়।' এবারেও পুজোয় কিছু ভার্চুয়াল শো করা ছাড়া বাড়িতেই কাটাবেন প্রস্মিতা।