মুম্বই: অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলায় তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের একাংশের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতরণার অভিযোগ দায়ের করেছেন সুশান্তের বাবা! এই প্রেক্ষাপটে বিহার পুলিশ এফআইআর রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। সুশান্ত সিং রাজপুতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর দু’টি কোম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখবে ইডি ।

সূত্রের খবর, মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার সকালেই বিহার পুলিশের কাছ থেকে এফআইআর কপি চেয়ে পাঠায় ইডি! তা হাতে পাওয়ার পরই তদন্ত শুরু করা হয়।
ইডি সূত্রে খবর,

  • সুশান্ত সিং রাজপুতের অ্যাকাউন্টে ১৫ কোটি টাকা কোথা থেকে এল

  • তারপর কোন কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তা যায়?

  • টাকা কীভাবে খরচ করা হয়?


এইসব বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।

রিয়া সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, সুশান্ত মৃত্যুর তদন্ত যেন পটনা থেকে মুম্বইয়ে নিয়ে আসা হয়। এই প্রেক্ষিতে সুশান্তের বাবার তরফে সর্বোচ্চ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করা হয়। অর্থাৎ‍ তিনি আর্জি জানালেন, রিয়ার আবেদনের ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আদালত যেন তাঁর কথাও শোনেন। বিহার সরকারের তরফেও সর্বোচ্চ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করা হয়েছে। সূত্রের খবর, পটনার ছেলে সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর আবেদনের বিরোধিতা করবে বিজেপি-জেডিইউ পরিচালিত বিহার সরকার। প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিশিষ্ট আইনজীবী মুকুল রোহতাগি বিহার সরকারের হয়ে মামলা লড়তে পারেন।
এদিকে বিহার বিধানসভা ভোটের আগে সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতিও তুঙ্গে। সুশান্তের মৃত্যুর মামলায় বিহার বিজেপির একাধিক নেতা এবং তাদের জোটসঙ্গী রামবিলাস পাসোয়ানের দল এলজেপি সিবিআই তদন্ত দাবি করছে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়। কিন্তু, সর্বোচ্চ আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বৃহস্পতিবার বলেন, 'তদন্ত পুলিশকেই চালাতে দিন।' মামলাকারীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনার কাছে জোরালো কোনও তথ্য থাকলে বম্বে হাইকোর্টে যান।

এদিকে এই প্রেক্ষাপটেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছেন ‘সুশান্তের পরিবার সিবিআই চাইলে, তিনি সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করতে পারেন’। এফআইআরে সুশান্তের বাবা রিয়ার বিরুদ্ধে সুশান্তের এক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন। তিনি অভিযোগপত্রে লেখেন, একটি অ্যাকাউন্টে সুশান্তের ১৭ কোটি টাকা ছিল। সেই টাকা থেকে ১৫ কোটি টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। যদিও দ্বিতীয় অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সুশান্তের কোনও যোগাযোগ ছিল না বলেই দাবি অভিনেতার বাবার।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মুম্বইয়ের বান্দ্রার বেসরকারি ব্যাঙ্কে হানা দেয় বিহার পুলিশ। যে ব্যাঙ্কে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট ছিল এবং যে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে তাঁর টাকা সরানো হয়েছে— দু’টি ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের সঙ্গেই কথা বলেন তাঁরা। বিহার পুলিশ বৃহস্পতিবার সুশান্ত সিং রাজপুতের রান্নার লোককেও জেরা করে। ঘটনার সময় যিনি সুশান্তের ফ্ল্যাটেই ছিলেন এবং সকালে সুশান্তকে বেদানার রস খেতে দিয়েছিলেন।