কলকাতা: করোনা রোগীর কাছ থেকে গয়না হাতাতে গিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেরই এক কর্মী। সঙ্গে গ্রেফতার পুরো একটি গ্য়াং।


বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ব্লকের সাত তলায় বসিরহাটের এক করোনা আক্রান্তের কাছে যায় হাসপাতালেরই এক অস্থায়ী কর্মী। সে ওই রোগিনীকে হাতে খাবার দিয়ে বলে, তাঁর বাড়ির লোকেরা নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরাই খাবারটা পাঠিয়েছেন। এরপর সেই কর্মী রোগিনীকে গয়না খুলে দিতে বলে। এ-ও বলে যে, পরিবারের লোক অপেক্ষা করছেন গয়নাগুলো বাড়িতে নিয়ে যাবেন বলে। রোগিনী যখন গয়না খুলে দিচ্ছিলেন, সেই সময়ই বিষয়টি ওই ফ্লোরের এক কর্মীর নজরে পড়ে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসকে টেলিফোনে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে সাদা পোশাকে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীরা সতর্ক হয়ে যান। এবং ওই অস্থায়ী কর্মী যখন লিফটে করে নীচে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, তাকে হাতেনাতে ধরেন। সঙ্গে নীচে অপেক্ষারত আরও তিনজনকে আটক করা হয়। ৪ জনকেই বৌবাজার থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। চারজনই মেডিক্যাল কলেজের চুক্তিভিত্তিক কর্মী।

বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে একটা দুষ্টচক্র গজিয়ে উঠেছে। এরা করোনা রোগী ও তাদের পরিবারের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ভর্তি করার নামে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। অনেকে করোনা রোগীদের জন্য বরাদ্দ খাবার চুরি করে নেয়। পাশাপাশি ওষুধ কেনার নামে এক শ্রেণির অস্থায়ী কর্মী টাকা চুরি করে নেয় বলেও অভিযোগ। গত সপ্তাহে এরকম অভিযোগে ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়। এবার একেবারে গয়না হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এল। যা অনেককেই হতবাক করছে। প্রশ্ন উঠছে, যখন করোনা রোগীরা জীবন মৃত্যুর মাঝে দাঁড়িয়ে তখন হাসপাতালের কর্মীই গয়না হাতাচ্ছে, এরকম ঘটনা বেনজির।

মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান এবং রাজ্যের মন্ত্রী নির্মল মাজি জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন। সে জন্যই এঁদের হাতেনাতে ধরা গিয়েছে। নির্মল মাজি বলেছেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমরা সতর্ক ছিলাম। পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। আগামীদিনে আরও সতর্ক নজর রাখা হবে যাতে রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কেউ প্রতারিত করার সুযোগ না পায়।’