কলকাতা: মেয়েটির তখন দশম শ্রেণী, ছেলেটি দ্বাদশ। উচ্চ-মাধ্য়মিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তখন থেকেই আলাপ। তারপর জীবনের ওঠা পড়া, চাকরি ছেড়ে নাটকের দল, পরিবার, তারপর ছেলের পড়াশোনা, সব বিষয়েই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই মেয়ে। সচ্ছল পরিবার ছেড়ে মধ্যবিত্ত পরিবারে বিয়ের সিদ্ধান্ত, অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়া, সব বিষয়েই ছেলেটির পাশে ছিল সেই মেয়ে। সময় পেরিয়েছে, দুজনেই হাতে হাত রেখে সাফল্য পেয়েছেন, পরিবার পেয়েছেন। সেই ছেলেটির নাম কৌশিক সেন (Kaushik Sen)। নারীদিবসের আগে, জীবনের সেরা নারী হিসেবে তিনি বেছে নিলেন স্ত্রী, রেশমি সেনকে (Reshmi Sen)।


প্রেমের শুরু একেবারে স্কুল জীবন থেকে। কৌশিক বলছেন, 'ছোট থেকেই যে কোনও মধ্যবিত্ত পরিবারের মত আমার ওপর বাবা-মায়ের প্রভাব খুব বেশি ছিল। বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর, হঠাৎ করে আমায় অনেকটা বড় হয়ে যেতে হয় যেন। একটা বেসরকারি চাকরি করতাম তখন। পরিবারে অনিশ্চয়তা, অথচ রেশমির পরিবার তখন বেশ স্বচ্ছল। তারপর চাকরি ছেড়ে জীবিকা হিসেবে অভিনয়কে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, নাটকের দল তৈরি করি। তারপর ছোটপর্দা, বড়পর্দায় অভিনয়। সবসময় পাশে ছিল রেশমি। অনিশ্চয়তা দেখে ও কখনও সরে যায়নি। ওর মত স্টেপ আউট করে ছক্কা মারতে খুব কম মানুষকে আমি দেখেছি। ওর জীবনের থিওরিটাই হল, স্টেপ আউট করো। দু-একবার মিস হলে হলেও.. ঠিক ছক্কা মারবেই।'


আরও পড়ুন: নাটকের দলের ৩০ বছর, থিয়েটারকে সময় দেব বলেই ধারাবাহিক করার সিদ্ধান্ত: কৌশিক সেন


এরপর জীবনে ঋদ্ধি (Riddhi) এসেছে। কৌশিক বলছেন, 'পড়াশোনা নয়, ঋদ্ধি যে অভিনয়ই করবে সেটাও রেশমির সিদ্ধান্ত। প্রথাগত পড়াশোনা আর অভিনয় একসঙ্গে চালাতে গিয়ে ঋদ্ধির ওপর চাপ পড়ে যাচ্ছিল। ও যে প্রথাগত পড়াশোনা ছাড়বে সেই ঝুঁকিও রেশমি নিয়েছিল। তাতে পরবর্তীকালে ওর উপকারই হয়েছে। অন্য অনেকের থেকেই ও বেশি পড়াশোনা করে। রেশমি পাশাপাশি ওকে সিনেমা দেখার অভ্যাসও করিয়েছে। এখন অনেক সময় ছবির বিষয়ে অনেক তথ্য জানতে ওর মুখাপেক্ষী হতে হয় আমাদের। বাবা হিসেবে গর্বও হয়।'