কলকাতা: প্রথমেই নজর কেড়েছিল ছবির পোস্টার। একটি শিশুর চারটি হাত! অন্যধারার গল্প নিয়ে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন ছবি, 'লক্ষ্মী ছেলে' (Lokkhi Chele)। প্রযোজনায় উইন্ডোজ (Windows)। আগামী ২৬ অগাস্ট মুক্তি পাবে এই ছবিটি। সমাজের কুসংস্কারের ভীত ঠিক কতটা ভিতরে? সেই নিয়ে মুখ খুললেন টলিপাড়ার বিভিন্ন ব্যক্তিত্বরা। 


কুসংস্কার নিয়ে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলছেন, যাঁরা ভিড় করে বেদের মেয়ে জোৎস্না দেখতেন, তাঁদের মধ্যে হয়তো কিছু কুসংস্কার ছিল। তাঁরা বিশ্বাস করতেন পুজো, মন্ত্রোচ্চারণে উপকার হয় মানুষের। কিন্তু অনেকেই বিদেশে গিয়ে গোমাংস খান আবার পুজোর সময় আচার বিধি মেনে পুজো করেন।'


চিকিৎসক কুণাল সরকার বলছেন, 'অনেক শিশুর বেশি আঙুল বা বেশি হাত পা হয়, সেটা সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক ব্যাপার। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, এখনও আমাদের সমাজের সব মানুষ সমান শিক্ষিত নন। অনেকসময় ওষুধ এবং বিজ্ঞানের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে দাঁড়ায় কুসংস্কার। '


অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী বলছেন, 'অনেককে দেখেছি বিশেষ কাজের জন্য নির্দিষ্ট রঙের পোশাক পরেন। অথবা সময়, সংখ্যা নিয়ে অনেকের অনেক রকম নিয়ম মেনে চলেন। কিছু লোক মনে করেন, বালিশে বসলে ফোঁড়া হয়। কিন্তু আদৌ তো সে সব কিছুই হয় না। আসলে বালিশটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে ভেবেই এই নিয়ম। এ সব কুসংস্কার তাদেরই তৈরি, যারা মানুষকে নিজের আয়ত্তে রাখতে চায়।'


আরও পড়ুন: Sahobashe Exclusive: 'এখন 'সহবাসে' হলে আমি আরও ভালো অভিনয় করতাম, তবে সারল্য কমে যেত'


অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী বলছেন, 'ঋতুস্রাব চলাকালীন ভগবানকে স্পর্শ করতে নেই এমন নিয়ম আমাদের সমাজে রয়েছে। প্রায় সমস্ত কুসংস্কারই সমাজকে অনেকটা পিছিয়ে নিয়ে যায়। ছোটবেলায় পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে মা-কে প্রণাম করে যেতাম। আমার বিশ্বাস ছিল এতেই পরীক্ষা ভাল হবে। কিন্তু পড়াশোনা না করলে কি সত্যিই পরীক্ষা ভাল হত? যে সব কুসংস্কার পিছিয়ে দেয় আমাদের, সেই গুলোকে অবিলম্বে জীবন থেকে মুছে ফেলা উচিত।'


অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য বলছেন, 'স্বাধীনতার পর ৭৫ বছর বয়স পেরিয়ে গেল। কিন্তু এখনও সমাজের একটা বড় অংশ তবু কুসংস্কারের কবল থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারল না। ‘লক্ষ্মী ছেলে’ ছবিটার মাধ্যমে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যে কথাগুলো বলতে চাইছেন, আমাদের আজকের সমাজে তার থেকে বেশি প্রাসঙ্গিক আর কিছু নেই।'