মুম্বই: প্রেম নাম হ্যায় মেরা। প্রেম চোপড়া। আইকনিক এই ডায়ালগ যাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়েছিল, তিনি এখন ৮১। সেদিনের সেই হিমশীতল ভিলেন আজ বৃদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু বলিউড এখনও তার সর্বযুগের ঘৃণ্যতম ভিলেন হিসেবেই মনে রেখেছে তাঁকে।

প্রেম চোপড়া জানাচ্ছেন, যৌবনে ধর্ষক, খলনায়কের চরিত্রে তাঁর অভিনয় দর্শকের মধ্যে এতটাই কাঁপুনি ধরাত, যে পর্দার বাইরে, অন্যত্র তাঁকে দেখলেও স্ত্রীকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন মানুষ। গোটা দেশ ঘৃণা করত তাঁকে। কিন্তু তাতে তাঁর আপত্তি ছিল না, বরং পছন্দ ছিল এই ঘৃণা। কারণ, এর মানে, তাঁর অভিনয় প্রকৃত অর্থেই ছুঁয়ে গিয়েছে বাস্তবের পর্দাকে।

উর্দু উৎসব জশন এ রেখতা উপলক্ষ্যে দিল্লি এসেছেন বৃদ্ধ অভিনেতা। জানিয়েছেন, আর পাঁচজনের মত তিনিও প্রথমে নায়ক হতেই চেয়েছিলেন। কিন্তু নায়ক হিসেবে যে কটা হিন্দি ছবিতে কাজ করেন, প্রতিটাই ফ্লপ করে। তখন অফার আসে নেগেটিভ চরিত্রের। ভিলেন হিসেবে তাঁর অভিনয় করা ছবিগুলি দর্শক সমাদৃত হয়। তখন থেকেই খলনায়কের সর্পিল রাস্তা ধরে তাঁর পথ চলা শুরু।

পুরনো হিন্দি ফিল্মের দর্শকরা নাকি বাস্তবের সঙ্গে ছবির চরিত্রের পার্থক্য করতেন না তেমন। তাঁদের কাছে ছবিতে যে ভিলেন, বাস্তবেও সে ভিলেন। তাই পর্দার বাইরে প্রেম চোপড়ার সঙ্গে পরিচয় হলে তাঁর সহজ স্বাভাবিক চরিত্র দেখে অবাক হতেন মানুষ। আগে অন স্ক্রিন ভিলেনের পক্ষে আর কখনও ভাল চরিত্র করা সম্ভব হত না। বা নায়করা পারতেন না নেগেটিভ রোল করতে। দর্শক তা গ্রহণ করতেন না।

আগের ভিলেনদের সঙ্গে এখনকার ভিলেনদের তফাত কী? প্রেম জানাচ্ছেন, আগে ছবির গল্প তৈরি হত ৩ মূল চরিত্র নিয়ে- নায়ক, নায়িকা আর খলনায়ক। কিন্তু এখন আর তা নয়। ভিলেনের অতীতের কোনও গল্প থাকত না তখন। বলা হত না, কেন সে এমন পথ বেছে নিল। এমনিই খারাপ করে দেখানো হত তাকে। কিন্তু এখন নায়করাই ভিলেন হন। তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড তুলে ধরা হয় পরিষ্কার করে। আজকাল যেভাবে ছবিতে প্রতিশোধ নেওয়ার ছক কষা হয় ও তা কার্যকর করা হয়, তা খুবই বাস্তবোচিত।

ভিলেনি হয়তো ছেড়েছেন। কিন্তু ছবি ছাড়েননি প্রেম চোপড়া। সামনেই মুক্তি পাবে তাঁর কয়েকটি ছবি। প্রথমে আসছে প্যাটেল কি পঞ্জাবি শাদি- এতে আছেন ঋষি কপূর ও পরেশ রাওয়াল। এছাড়াও রয়েছে উড়াঞ্ছু ও জিনা ইসি কা নাম হ্যায়।