কলকাতা: ১১ এপ্রিল, ইদের (Eid 2024) মরশুমে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে 'মির্জা' ('Mirza')। অঙ্কুশ হাজরা (Ankush Hazra), ঐন্দ্রিলা সেন (Oindrila Sen), কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের (Kaushik Ganguly) মতো তারকা অভিনেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করেছেন শোয়েব কবীর (Shoaib Kabeer Exclusive)। এর আগে একাধিক হিন্দি প্রজেক্টে ভিলেনের চরিত্রে কাজ করলেও বাংলায় প্রথম। কী প্রতিক্রিয়া দর্শকের? কেমন ছিল কাজের অভিজ্ঞতা? 'মির্জা'র হাত ধরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরেছে কমার্শিয়াল ছবির আমেজ। সাফল্যের ফাঁকেই এবিপি লাইভকে (ABP Live) সময় দিলেন শোয়েব। 


কীভাবে 'মির্জা'র অফার পেলেন শোয়েব?


শোয়েব কবীরের কথায়, 'আমি 'মির্জা'র অফার পেয়েছিলাম যখন অঙ্কুশ দা, সুমীত দা (পরিচালক) এবং এই ছবির পুরো টিম '২৬/১১' দেখেছিল। সেই সময় সুনীল শেট্টি ও বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে 'ধারাভী ব্যাঙ্ক' বলে একটি সিরিজেও কাজ করেছিলাম। তখনই এই ছবির জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ওঁরা জানতে পারেন যে আমি বাঙালি। এরপর পুরোটাই অঙ্কুশ দার অ্যাপ্রুভাল। ওঁর কাছে এই চরিত্রের জন্য অনেক অপশন ছিল, তা সত্ত্বেও, অঙ্কুশ দা আমাকে প্রচণ্ড সমর্থন করেন। আমি প্রথম পছন্দ ছিলাম এই চরিত্রের জন্য। আমার বাবার চরিত্রের অভিনেতা বদলেছে, প্রযোজক বদলেছে অনেক, কিন্তু আমি প্রথম থেকেই এই চরিত্রের জন্য স্থির ছিলাম। এই পুরো কৃতিত্বটাই অঙ্কুশ হাজরা ও তাঁর টিমের।' 


অঙ্কুশ হাজরা, ঐন্দ্রিলা সেন, সকলেই প্রতিষ্ঠিত শিল্পী, সেই সঙ্গে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতা, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?


অকপট শোয়েব, 'অঙ্কুশ দার ফিল্মোগ্রাফিতে, 'ভিলেন'-এর মতো ছবিও আছে, আবার 'বলো দুগ্গা মাঈকি', 'জুলফিকার' বা 'শিকারপুর'-এর মতো কাজ রয়েছে। আমার মতে ওঁর মতো অভিনয়ের প্রতিভা খুব কম লোকের আছে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। এমন একজন অভিনেতার সঙ্গে আমার কাজ, মানে ছবিতে রীতিমতো তাঁকে তাড়া করা, এটা বেশ মুশকিলের বিষয় ছিল। কিন্তু সেটা আমার জন্য সহজ করে দিয়েছে অঙ্কুশ দা নিজেই। এমন একাধিক দৃশ্য হয়েছে যে ও হয়তো দারুণ একটা পারফর্ম্যান্স দিয়ে বেরিয়ে গেছে, কিন্তু আমি হয়তো সেভাবে পারফর্ম করতে পারিনি। আমার জন্য সেই দৃশ্যের রিটেক করিয়েছেন তিনি। তার জন্য আমি ওঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। এখন উনি আমার জন্য একজন অভিনেতা বা সহকর্মী নন, আমার দাদার মতো। আমাকে প্রচণ্ড সাহস দেন। অন্যদিকে কৌশিক স্যার। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় মানে একটা প্রতিষ্ঠান। ওঁর সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার সৌভাগ্য। আমি ওঁর অভিনয় ক্ষমতার ধারেকাছেও নেই। উনি যা সংলাপ দিয়েছেন আমি শুধু প্রতিক্রিয়া দিয়েছি, এর থেকে বেশি কিছু করার ছিল না। আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ যে ওঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সেই অর্থে স্ক্রিন শেয়ার করিনি এই ছবিতে। কিন্তু ও মানুষ হিসেবে অত্যন্ত ভাল। প্রজেক্টটা শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকে অঙ্কুশ দার সঙ্গে ঐন্দ্রিলাও ভীষণভাবে পাশে থেকেছে আমার। ওঁর দৃশ্যগুলোও এত দারুণ, আমি এর আগে বাঙালি কোনও নায়িকাকে এইভাবে স্টান্ট করতে দেখিনি। প্রত্যেকটা স্টান্ট ও নিজে করেছে। একইরকমের দারুণ অভিনয় করেছে আবেগঘন দৃশ্যগুলোতেও।'


আরও পড়ুন: SRK-Suhana: বাবার হাত ধরেই বড়পর্দায় পা? ২০০ কোটি বাজেটের ছবিতে একসঙ্গে শাহরুখ-সুহানা?


বাংলা ছবিতে প্রথমবার ভিলেনের চরিত্রে অভিনয়, 'মির্জা' মুক্তির পর পাওয়া সবচেয়ে প্রিয় প্রতিক্রিয়া কোনটা? এবং সেটা কার থেকে পাওয়া?


উচ্ছ্বসিত শোয়েব বলে চলেন, 'এর আগে হিন্দিতে নেতিবাচক চরিত্রে কাজ করেছি তবে বাংলায় এই প্রথম। এত বড় প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, সেটাই আমার জন্য আনন্দের বিষয়। আমার চরিত্র উন্নত করার ক্ষেত্রে সুমীত দা (পরিচালক সুমীত গোরাদিয়া) প্রথম দিন থেকে আমাকে সাহায্য করেছেন। সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর আমার চরিত্র নিয়ে দর্শক বাড়তি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আমাকে ট্যাগ করছেন, মিডিয়ায় লেখালেখি হচ্ছে, সেই থেকে আন্দাজ করতে পারছি যে চরিত্রটাকে আশামূলক একটা জায়গায় পৌঁছে দিতে পেরেছি। এটা অবশ্যই ভাল লাগার বিষয়। সিনেমা দেখে দেব দা বলেছিলেন, 'তুই তো ফাটিয়ে দিয়েছিস, দারুণ হয়েছে'। রুক্মিণী দি বলেন, 'দারুণ কাজ করেছ'। অতনু রায় চৌধুরীও প্রশংসা করেন আমার কাজের। কর্মক্ষেত্রে সিনিয়ররা যখন কাজের প্রশংসা করেন তখন সেটা তো বাড়তি পাওনা বটেই। আর আমার ছোট বোন যে খুব একটা সিনেমা দেখে না, এবং আমার পারফর্ম্যান্সের ভীষণভাবে সমালোচনা করে, তার প্রথমবার আমার কাজ ভাল লেগেছে। তো এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওনা।'


প্রেক্ষাগৃহে আপাতত রমরম করে চলছে 'মির্জা'। অনেকদিন পরে, 'মাস কমার্শিয়াল সিনেমা' এসেছে বাংলা ছবির দর্শকের কাছে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।