কলকাতা: সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’-এর অডিশনে যোগ্য প্রতিযোগীদের বঞ্চিত করে অন্যদের অন্যায়ভাবে সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে এমনই অভিযোগ করলেন বাংলাদেশের মডেল ও অভিনেত্রী শান্তা পাল। তাঁর অভিযোগ ফ্লোরা ব্যাঙ্কের মালিক ডিউকের দিকে। শান্তার দাবি, মডেল তানজিলা জামান মিথিলার সঙ্গে ডিউকের বিশেষ সম্পর্ক আছে। সেই কারণে অডিশন না দিয়েই প্রথম ৫০ জনের মধ্যে সুযোগ পেয়েছেন মিথিলা।
এ বিষয়ে আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর শফিক ইসলাম বলেছেন, ‘যারা বাদ পড়েছে, তারা নিজেদের প্রথম পঞ্চাশে দেখতে না পেয়ে হিংসায় এই ধরনের মিথ্যাচার করছে। বিশেষ করে একজন মডেলই এই অভিযোগ করছে। তার মানসিক সমস্যা আছে। এই অনুষ্ঠান টিভিতে দেখানো হবে। অডিশনের ভিডিও সহ সব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
আজ ঢাকা থেকে ফোনে এবিপি আনন্দকে শান্তা বলেছেন, ‘আমি অনেকদিন ধরে মডেলিং করছি। আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। ফলে এই ধরনের প্রতিযোগিতায় কী কী নিয়ম থাকে, সেটা আমি ভালই জানি। আমি যেহেতু বাংলাদেশে আছি সেহেতু এই সময়কে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু শেখার উদ্দেশ্যে আমি মিস ইউনিভার্স-২০২১ এর মঞ্চে উপস্থিত হই এবং ৮/১০ জনের মতো আমিও খুবই সাধারণ পরিবারের মেয়ে হয়ে ওখানে অডিশন দিতে চেয়েছিলাম। তাই আমি চুপ করে লাইনে দাঁড়াই। প্রায় তিন ঘন্টা আমি লাইনে ছিলাম এবং অপেক্ষায় ছিলাম কখন আমার অডিশন শুরু হবে। এর মধ্যে আমি দেখতে পাই আমাদের সিনিয়র মডেল তানজিলা জামান মিথিলাকে। যিনি অলরেডি বলেছেন যে উনি বলিউডে ফিল্ম করছেন এবং অনেক ভাল ভাল কাজ করছেন এবং তার এই সাফল্যে আমরা সবাই খুশি। তিনি আরও এগিয়ে যাবেন এই প্রত্যাশা সবসময় করি। তিনি তেমন অপেক্ষা না করেই বেরিয়ে যান। আমি স্পষ্ট দেখলাম, যেখানে আমি তিন ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করে বসে আছি সেখানে অডিশন না দিয়েই মিথিলা ভেন্যু থেকে বেরিয়ে গেলেন। উনি ফিরে এসে অডিশন দেননি। কারণ অডিশনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত আমি ছিলাম। ওখানকার সহকর্মী ফটোগ্রাফার এবং চ্যানেলের সবাই বলেন, মিথিলা চলে গেছেন। শুরু থেকে শেষপর্যন্ত ওঁকে আর দেখতে পারিনি। কিন্তু প্রতিযোগিতার ফল প্রকাশ হওয়ার পর জানলাম, উনি সেরা ৫০-এ জায়গা করে নিয়েছেন। খবরটি শুনে আমি বেশ অবাক হয়েছি। এ ব্যাপারে আমি মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। উত্তরে তারা আমাকে জানায়, ওঁর অডিশন হয়েছে সবার শেষে। কিন্তু আমরা যতক্ষণ ছিলাম, মিথিলার অডিশন হয়নি। তাহলে কী করে উনি সুযোগ পেলেন বুঝতে পারছি না।’
শান্তার আরও দাবি, ‘এ মাসের ১১ তারিখ অডিশন হয়। অডিশনে আমার ক্রমিক সংখ্যা ছিল ১৯২ আর মিথিলার ২০৩। আমি ঠায় বসেছিলাম। মিথিলা একটু থেকেই চলে গেল। শেষে আমরা ৬ জন ছিলাম। আমরা যখন অডিশন দিতে গেলাম, তখন একদম শেষের দিক। আমাদের কয়েকজনের অডিশনের পরেই মঞ্চের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। সবাই বাড়ি চলে যায়। অডিশনে আমাকে অনেক প্রশ্ন করা হয়। আমি সব প্রশ্নেরই জবাব দিই। আমি চলে আসার পর পরিচিত এক চিত্রগ্রাহককে মিথিলার বিষয়ে প্রশ্ন করি। ও তখন বলে, মিথিলা চলে গেল। ও মনে হয় অডিশন দেবে না। পরে জানতে পারি, ৫০ জনকে বাছাই করেছে। ডিউক সাহেবের গার্লফ্রেন্ড মিথিলা। সেই কারণে ও অডিশন না দিয়েই সুযোগ পেয়েছে। প্রথম ৫০-এর মধ্যে বাকি যারা জায়গা পেয়েছে, তাদের যোগ্যতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।’