কলকাতা: রুপোলি পর্দার অভিনেতা, নাটকের মঞ্চের সঙ্গে দীর্ঘদিনের যোগাযোগ, নিজের ব্যবসা.. সব মিলিয়ে বেশ গোছানো জীবন তাঁর। কিন্তু সত্যিই সফরটা মসৃণ ছিল না এতটা। অতীতে অন্ধকার বার বার ফিরে এসেছে বর্তমানে, অপমানিত হতে হয়েছে। কিন্তু তিনি শপথ নিয়েছিলেন, যে শহরে সম্মান হারিয়েছে, সসম্মানে বাঁচবেন সেখানেই। নতুন ছবি মুক্তির পরে এবিপি লাইভের সঙ্গে সেই ফেলে আসা পথকেই ফিরে দেখলেন নাইজেল আকারা (Nigel Akkara)।


সদ্য মুক্তি পেয়েছে নতুন ছবি 'তীরন্দাজ শবর' (Tirondaaj Sobor)। অরিন্দম শীল পরিচালিত এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন নাইজেল। অবাঙালি নাইজেল এখন দিব্যি বাংলা বলেন, লেখেনও। বাংলা ছবিতে কাজ করতেও দিব্যি সাবলীল তিনি। অভিনেতা বলছেন, 'প্রথম যখন অভিনয়ে পা রাখি, আমি বাংলা পড়তে পারতাম না। ছোটবেলা থেকে পাঠ্যে বাংলা ছিল না আমার, কথাও বলতাম হিন্দিতে। 'মুক্তধারা'-র চিত্রনাট্যও লেখা ছিল ইংরাজি হরফে। এখন আমি বাংলা পড়তে, লিখতে দুইই পারি। নাটক পরিচালনার কাজও করি বাংলায়। আমি মাকে বলেছিলাম, যে সম্মান তুমি পশ্চিমবঙ্গে হারিয়েছো, সেই সম্মান তোমায় ফিরিয়ে দেব কলকাতাতেই। আমার কখনও কোনও কাজের জন্যই বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। সুযোগ পেলেও কলকাতার বাইরে যাইনি। কারণ এখন আমার ব্যাঙ্কে কত পুঁজি আছে সেটা আমায় ভাবায় না। ভাবায়, মানুষ আমায় কীভাবে মনে রাখছে সেটা। আমার লড়াইটা সেটার জন্যই। এখন মা খুশি.. আমার সঙ্গেই আছেন।'


আরও পড়ুন: Nigel Akkara Exclusive: 'প্রথম ছবি মুক্তির পরে কোর্টে অপমানিত, ভেবেছিলাম আর অভিনয় করব না'


জেলের অন্ধকারে কাটিয়ে আসা সময় নিয়ে এখনও যখন বিভিন্ন মানুষ প্রশ্ন করেন, খারাপ লাগে নাইজেলের? একটু হেসে অভিনেতা বললেন, 'এখন এক্কেবারে খারাপ লাগে না। প্রথম প্রথম মনে হত কেন মানুষ শুধু আমার খারাপটা দেখছেন, আমি তো ভালো হতে চাইছি। নিজেকে বড় বড় মানুষের সামনে ছোট লাগত। একটা সময়ের পরে মেনে নিলাম, আমি অতীতকে বদলাতে পারব না। কিন্তু আমায় বর্তমানটা সুন্দর করতে হবে। এখন মানুষ আমায় ভালোবাসেন। আর ১২-১৩ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে ফেলার পরেও যদি মানুষ আমার অতীতকে ভুলতে না পারেন তাহলে সেটা তাঁদের সমস্যা। আর সেই অতীতের কথা যদি বেশি বিক্রি হয়, যদি সেটাই মানুষ বেশি শুনতে চায়, তাহলে সেটাই শুনুক।'