কলকাতা: আজ থেকে ঠিক ১ বছর আগের কথা। একটা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। পড়বারই কথা। তখন আগুন জ্বলছে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মানুষের মনে। কটা দিন আগে ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনার কথা ভুলতে পারছিলেন না কেউ। আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা বাংলাকে। শুধু বাংলা বললেও ভুল হবে, গোটা ভারতকে, এমনকি গোটা বিশ্বকে। প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন সমস্ত মানুষ। ১৪ তারিখ রাতে ইতিহাসের সাক্ষী ছিল গোটা দেশ। 'মেয়েরা রাত দখল করো' স্লোগান দিয়ে শুরু হয়েছিল যে আন্দোলন, সেখানে যোগ দিয়েছিলেন নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ। কলকাতা থেকে জেলা, পশ্চিমবঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল সেই আন্দোলন। গোটা শহরের রাত ঘুমহীন.. রাস্তায় নেমেছে মানুষ, গলা তুলছে, প্রতিবাদ করছে.. সবার কন্ঠে একটাই কথা.. 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'।
পেরিয়ে গিয়েছে গোটা একটা বছর। বিচার মেলেনি। আরজি কর কাণ্ডের তদন্ত এখনও চলছে। এখনও বাংলার মানুষের বুকে ধিক ধিক করে জ্বলছে সেই আগুন। সেই আগুন বুকে নিয়ে ফের আরেকটা রাত দখল। আরও একটা ১৪ অগাস্ট। পশ্চিমবঙ্গের দিকে দিকে আজ রাতেও জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। আজও ফের রাত জাগবে শহর কলকাতা। সবার গলায় থাকবে সেই একটাই স্বর.. 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'। তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ.. পথে নেমেছেন সবাই।
গত বছরও প্রতিবাদের মঞ্চে সামিল হয়েছিলেন তিনি, ছবিটা বদলায়নি এই বছরও। রাত গড়াতেই সিঁথির মোড়ে প্রতিবাদে সামিল বর্ষীয়ান অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Paran Bandhopadhay)। এবিপি আনন্দকে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, 'ওই যে দাড়িওয়ালা মানুষটা, আমরা সবাই যাঁকে বিশ্বকবি বলি, তিনি বহু যুগ আগে বলে গিয়েছিলেন, 'প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধে, বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে'.. বহুযুগ আগে বলে গিয়েছিলেন। তাই প্রশ্ন করেছিলেন ভগবানের কাছে যে, 'যাহারা তোমার বিষায়েছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো, তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছো? তুমি কি বেসেছো ভাল?' ভগবান উত্তর দেয়নি। যুগ যুগ ধরে ভগবানের কাছে এই প্রশ্ন করা হয়েছে, কিন্তু তিনি এর উত্তর দেননি। চিরকালই ভগবান নীরব। মানুষই তো ভগবান তৈরি করেছে। সুতরাং মানুষের প্রশ্নের উত্তর ভগবান দিতে পারছেন না। কিন্তু আজ, এই যুগে, নতুন দুনিয়ায়, মানুষের ভগবান জাগছে। এবার উত্তর পাওয়া যাবে।'