কলকাতা: সিঁদুরে রাঙা মুখ, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন রুদ্রজিৎ-এর দিকে। দশমী পেরিয়ে গেলেও এই ছবিটাই হোয়াটসঅ্যাপ ডিপিতে রেখে দিয়েছেন প্রমিতা। পুজোর সময় এই প্রথমবার কলকাতা ছেড়েছিলেন, সেও তো প্রেমেরই টানে। আগামী বছর আইনি বিয়ে সারবেন বলে স্থির করে ফেলেছেন তাঁরা। রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় ও প্রমিতা চক্রবর্তী। টেলি দুনিয়ার ‘রুমিতা’  জুটির প্রেম নয় নয় করেও পেরিয়ে গেল ২ বছর।

‘জীবন সাথী’ ধারাবাহিকে ‘তূর্ণ’-র চরিত্রে অভিনয় করছেন রুদ্রজিৎ। সদ্য ‘এখানে আকাশ নীল’ ধারাবাহিক শেষ করেছেন ঝিনুক ওরফে প্রমিতা। কথা চলছে নতুন ধারাবাহিক নিয়ে। ইনস্টাগ্রামে নববধূর সাজে নজর কাড়ছে প্রমিতার ফটোশ্যুট।



বিয়ের আগেই কনের সাজ দেখে ফেললেন যে রুদ্রজিৎ! উত্তর দিতে গিয়ে হেসে ফেললেন প্রমিতা। বললেন, ‘বধূবেশে সাজার সময় রুদ্রর কথাই ভেবেছি। এমন লাল শাড়ি, গয়নার সাবেকি সাজ খুব পছন্দ ওর। আমারও তাই। ছবিগুলো ওর ভীষণ ভাল লেগেছে। আর শুধু এইগুলো কেন, আমি যে কোনও শাড়ি পড়লেই রুদ্র মুগ্ধ হয়ে যায়।’



আইনি বিয়ে সারতে ফ্রেব্রুয়ারি মাসেই পুরুলিয়ায় পাড়ি দেবে মুখোপাধ্যায় ও চক্রবর্তী পরিবার। আংটিবদলের দিনটিও ভালোবাসার। ১৪ ফেব্রুয়ারী, ভ্যালেন্টাইনস ডে।  ইতিমধ্যেই চুপি চুপি সেখানে গিয়ে রিসর্ট ঠিক করে ফেলেছেন ‘রুমিতা’। প্রমিতা বললেন, ‘এখন অনুষ্ঠানের কিছুটা দেরি থাকলেও আমরা করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই সমস্ত ঠিক করেছি। রুদ্রজিৎ-এর বাড়ি পুরুলিয়াতে। ওখানে করোনার প্রভাব কম। তাই ওদের পরিবারের সবাইকে কলকাতায় না আসতে বলে আমরাই ওখানে যাব ঠিক করলাম। আংটিবদল অনুষ্ঠানে কিছু পরিবারের লোক থাকবেন কেবল।’ এখানেই শেষ নয় পরিকল্পনার। প্রমিতা বলে চললেন, ‘অনুষ্ঠানের দিন আমরা একটা ডান্স পারফরম্যান্স করব। রুদ্রর খুব পছন্দের ‘ওয়ার’ ছবির ‘ঘুঙরু’ গানটা। মাঝেমাঝেই ওটা গুণ গুণ করে। তাই ওই গানটাই পছন্দ করলাম। ডিসেম্বর থেকেই রিহার্সাল শুরু করব।’ আর সামাজিক বিয়ে? ‘ইচ্ছা আছে ২০২২ সালে..’ সলজ্জ জবাব প্রমিতার।



টালিগঞ্জের করুণাময়ীতে ফ্ল্যাট কিনেছেন রুদ্রজিৎ। বিয়ের পর সেখানেই থাকবে টলি পাড়ার এই জুটি। কথায় কথায় উঠে আসে নতুন সংসারের আলোচনা? প্রমিতা বলছেন, ‘আমরা দুজনেই আমাদের পেশাটা নিয়ে ওয়াকিবহাল। সকালে বেরনো আর রাতে ফেরা। সেভাবেই সংসারের কাজ ভাগ করে নেব। রুদ্র কিন্তু ভীষণ ভাল রান্না করে। একবার ও সাত ভাই চম্পার সেটে বিরিয়ানি তৈরি করে এনেছিল। আমি যে কতবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এটা তুমি বানিয়েছো! তেল, নুন, মশলা সমস্ত একদম পারফেক্ট! আমিও এখন রান্না শিখছি। রুদ্রকে অনেক রকম রান্না করে খাওয়াতে পারি আজকাল।’সেই বিরিয়ানিই কি প্রেমপত্রের কাজ করেছিল? প্রমিতা হেসে বললেন, ‘বলতে পারেন। তবে রুদ্রর মধ্যে আমার যেটা সবচেয়ে ভাল লাগে, ও ভীষণ ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। অতিরিক্ত কথা বলে না। আর ভীষণ কেয়ারিং। এবার পুজোয় ওর বাড়ি গিয়েছিলাম। ওর প্রতিটা ব্যবহারে বুঝতে পারি রুদ্র আমার কতটা খেয়াল রাখে।’প্রেমে অন্ধ, নাকি রুদ্রজিৎ-এর খামতিও চোখে পড়ে? একটু ভেবে প্রমিতা বললেন, ‘রুদ্র একটু বেশিই সরল। মানুষকে খুব সহজে বিশ্বাস করে ফেলে। তবে ওর এই স্বভাবটার জন্যই প্রেমে পড়েছিলাম।’