মুম্বই:  প্রত্যুষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মহত্যার পর বারো দিন কেটে গেছে। সামনে এসেছে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার আমাদের প্রতিনিধির সামনে মুখ খুললেন রাহুল রাজ সিংহের প্রাক্তন বান্ধবী সালোনি শর্মা। প্রত্যুষার আত্মহত্যার মামলার তদন্ত চলাকালীন বারংবারই তাঁর নাম উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে প্রত্যুষার আত্মহত্যা প্রসঙ্গে পুলিশের কাছে লিখিতভাবে নিজের বয়ানও জমা দিয়েছেন সালোনি।

তাঁর সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধির কথপোকথনের অংশ তুলে দেওয়া হল

প্রত্যুষার আত্মহত্যা মামলায় আপনার ভূমিকা কি?

আমি এবং রাহুল রাজ সিংহ একে অপরকে গত পাঁচ বছর ধরে চিনি। আমি রাহুল এবং প্রত্যুষার মধ্যে আসিনি, প্রত্যুষা আমার আর রাহুলের মধ্যে এসেছিলেন, দাবি সালোনির। সালোনি জানিয়েছেন, রাহুল তাঁর কাছে সবসময়ই বলতেন প্রত্যুষা তাঁর খুব ভাল বন্ধু ছাড়া আর কিছুই নয়।

আপনার সঙ্গে রাহুলের সম্পর্ক কেমন ছিল?

রাহুল একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা খুলেছিলেন। সেই সংস্থায় সালোনি ৩০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। সালোনির দাবি মূলত রাহুল তাঁর কাছ থেকে এই টাকাটা ধার নিয়েছিলেন। এই সময়ই দুজনের প্রেমের শুরু। প্রত্যুষা তাঁদের জীবনে আসেন ২০১৪ সালের মে মাসে। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে প্রত্যুষার সঙ্গে রাহুলের সম্পর্কের বিষয় জানতে পারেন সালোনি।
সেদিনই রাহুলের সঙ্গে দেখা করতে এবং এই খবরের সত্যতা যাচাই করতে তাঁর বাড়ি যান সালোনি। সালোনির দাবি সেই সময় মদ্যপান করছিলেন প্রত্যুষা। নেশার ঘোরে তাঁর এবং রাহুলের কথার মাঝখানে চলে আসেন প্রত্যুষা। প্রত্যুষা এসে জানান, তাঁদের সম্পর্কের কথা যখন সালোনি জেনেই গেছেন, তখন এটাও জেনে রাখা উচিত্ তাঁরা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বিয়ে করছেন তাঁরা। যদিও রাহুল পুরো বিষয়টাই অস্বীকার করেন, এবং সালোনিকে জানান তাঁরা শুধুই বন্ধু। সালোনির দাবি এরপর অগাস্টে রাহুল-প্রত্যুষাকে হাতে না হাতে ধরে ফেলেন তিনি।
সালোনি জানান এরপর তিনি প্রত্যুষার সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান রাহুল একজন জালিয়াত। সালোনির বাবা-মাও প্রত্যুষার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। যদিও তখন তাঁরা সালোনিকে বিশ্বাস করেননি এবং প্রত্যুষার বাবা-মা বলেন, এটা তাঁদের একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি।

আপনি কী প্রত্যুষাকে মেরেছিলেন?

সালোনি জানান তিনি রাহুলকে ধার দেওয়া তিরিশ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে আনতে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬-এ প্রত্যুষা যে ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেছিলেন সেখানে গিয়েছিলেন। সেদিন রাহুল-প্রত্যুষার সঙ্গে সালোনির বচসাও হয়। বচসা হাতাহাতি পর্যন্ত এগিয়েছিল। সেসময়ই নিজেকে বাঁচাতে পাল্টা প্রত্যুষাকে মারতে বাধ্য হন বলে দাবি করেছেন সালোনি। এই ঘটনাটি বাঙ্গুর নগর থানা পর্যন্ত গড়ায়। সালোনির দাবি, সেদিন থানায় দাঁড়িয়ে প্রত্যুষা-রাহুল সালোনির কাছে ক্ষমা চান এবং ঘটনাটি সেখানেই মিটিয়ে নেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা, দাবি সালোনির।