নয়াদিল্লি: ছোটবেলা তাঁর বিশ্বাস ছিল, গায়ের রং 'কালো' হলেই কেউ সুন্দর হয় না। তিনি নিজে শ্যামবর্ণা ছিলেন বলে পরিবারের লোকেরা ডাকতেন 'কালী' বলে। পরে অবশ্য ভুল ভাঙে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার। এমনকী, ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন করাও ছেড়ে দেন। ত্বক ফর্সা করার ক্রিমের বিজ্ঞাপন করাকে নিজের অন্যতম ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপনে কাজ করার জন্য আফসোস করেন অভিনেত্রী। হলিউডে পা রাখার পর থেকেই মূলত অভিনেত্রী এই ধরনের বিজ্ঞাপনে কাজ করা বন্ধ করে দেন।


একটি সাক্ষাৎকারে প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, 'ভারতীয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাছে ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন করা খুবই সাধারণ বিষয়।' তিনি তাঁর বই ‘আনফিনিসড’এ লিখেছেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের পক্ষে ফর্সা হতে চাওয়াটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। এখানে একটি বড় সংখ্যক মানুষ ফর্সা হতে চান। পাশাপাশি অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে মুখে দাগ থাকলেও তা অস্বস্তিকর। গায়ের রং কালো হওয়ার দরুন ফর্সা হওয়ার জন্য মুখে ট্যালকম পাউডার মাখতাম। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর।'

২০১৫ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, নিজে থেকে বুঝতে পেরেই খারাপ অনুভূতির জেরে ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমার অন্য তুতো ভাইবোনরা প্রত্যেকে ফর্সা ছিল। তবে আমার গায়ের রং ছিল শ্যামলা। আমার বাবার মতো। তাই পঞ্জাবি পরিবারের সকলে মজা করে আমাকে সকলে ‘কালী' নামে ডাকত। সেই কারণে ১৩ বছর বয়স থেকে গায়ের রঙ বদলের জন্য মুখে ফেয়ারনেস ক্রিম মাখতে শুরু করেছিলাম আমি।' প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, কিশোরী বয়সে মার্কিন মুলুকে পড়াশোনা করতে গিয়েও বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন তিনি। এর জেরে পালিয়ে এসেছিলেন সেই দেশ থেকে।

আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে প্রিয়ঙ্কার আত্মজীবনী ‘আনফিনিসড’। বইতে অভিনেত্রীর ছোটবেলা থেকে শুরু করে, পাঠকদের কাছে তাঁর জীবনের নানা মুহূর্ত তুলে ধরেছেন তিনি।