কলকাতা: একটা ১৩ বছরের মেয়ের গল্প এটা। তবে শৈশবের নয়, এই গল্প লড়াইয়ের। আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে অংশুমান প্রত্যুষের নতুন ছবি 'নির্ভয়া' (Nirbhaya)। ছবির মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন প্রিয়ঙ্কা সরকার, গৌরব চক্রবর্তী, সব্যসাচী চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় ও হিয়া দে। একটি ১৩ বছরের মেয়ের গণধর্ষণের শিকার হলে দোষীকে শাস্তি দেয় আইন। কিন্তু ঠিক কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় নির্যাতিতাকে? সেই গল্পকেই পর্দায় তুলে ধরবে 'নির্ভয়া'। প্রথমবার চিত্রনাট্য শুনে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেননি প্রিয়ঙ্কা সরকার (Priyanka Sarkar)। 


প্রথমবার চিত্রনাট্য শুনতে গিয়ে নাকি কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেননি প্রিয়ঙ্কা। এবিপি লাইভকে অভিনেত্রী বলছেন, 'একদম অন্যরকম একটা গল্প। চিত্রনাট্যটা শুনে মনে হয়েছিল, এমন ঘটনা আমরা হামেশাই শুনি, কিন্তু এইভাবে ভেবে দেখিনি। গোটা কাজটার সঙ্গে আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত একটা যোগসূত্র তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সবারএই কাজটা করার সময় মনে হয়েছে, এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলা উচিত। আমরা চাই দর্শক যখন সিনেমাহলে সিনেমাটা দেখতে যাবে, এমনই ধাক্কা খাবে। 


ছবিতে একজন আইনজীবীর চরিত্রে অভিনয় করছেন প্রিয়ঙ্কা। কী কী প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল? অভিনেত্রী বলছেন, 'অবশ্যই আইনি বিভিন্ন শব্দ, একটা কোর্টরুমের পরিবেশকে মাথায় রাখতে হয়েছিল। এই বিষয়ে পরিচালক সাহায্য করেছেন খুব। আর হ্যাঁ একটা মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল এই গল্পটা বলার জন্য। প্রধান চরিত্রে হিয়া অভিনয় করেছে। ও খুব মিষ্টি বাচ্চা একটা মেয়ে। ওকে যখন অন্ত্বঃসত্ত্বার মেক আপে দেখছি, আমরা মানসিকভাবে বিব্রত হয়ে পড়েছিলাম। পরিস্থিতিটা এমন ছিল, আমাদের আলাদা করে অভিনয় করতে হয়নি। এতটাই মানসিকভাবে ছবিটার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম, সিন না থাকলেও আমরা সেটে রয়ে যেতাম।'


বাড়িতে ছোট্ট সহজ রয়েছে। 'নির্ভয়া'-র মত ছবি নিয়ে সহজের সঙ্গে আলোচনা করতে স্বচছন্দ? প্রিয়ঙ্কা বলছেন, 'সহজ এখন খুব ছোট্ট। ওকে যদি বড়দের ধ্যানধারণা থেকে বোঝাতে চাই, ও বুঝবে না। তার জন্য অভিজ্ঞতা দরকার। তবে একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করেছি। এখনকার বাচ্চারা মানসিকভাবে খুব এগিয়ে। আমি দেখেছি, বাচ্চাদের মধ্যে যদি কোনও সমস্যা হয় বা বড়রা এসে কিছু বললে, ওরা নিজেদের মতো করেই তার প্রতিবাদ করে। জিনিসগুলো মিটিয়ে নেয়। এখন সহজদের সিলেবাসে এখনই ব্যাড টাচ, গুড টচ রয়েছে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেবলমাত্র মেয়েরা নয়, ছেলেরাও বিপদে পড়তে পারে। এখন ছোটদের সঙ্গে শারিরীক হেনস্থা নিয়ে কথা বলি অনেক সহজে। কারণ ওদের পাঠ্যে এই বিষয়গুলো আছে। আমাদের খারাপ স্পর্শ বাসে-ট্রেনে উঠে বুঝতে হয়েছে, প্রথমদিন হয়ত বুঝিনি। পরেরদিন বুঝেছি, কিন্তু বুঝতে পারিনি কাকে বলব, সে কী কী ভাববে। লজ্জা..ভয়.. সব মিলিয়ে হয়ত চুপ করে থেকেছি বা মেনে নিয়েছি। সহজ সেগুলো পাঠ্যে পড়ছে। সহজ জানে ঘরে-বাইরে যে কোনও জায়গায় শারিরীক হেনস্থার শিকার হতে পারে যে কেউ। সেটা হলে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে স্কুলে ওদের শেখানো হয়। আস্তে আস্তে দিন বদলাচ্ছে। আমরা চাই লজ্জা, ভয় থেকে বেরিয়ে এসে সবাই এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করুক।'