মুম্বই: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতদন্ত সামান্তরালভাবে করছে তিন কেন্দ্রীয় সংস্থা -- সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো।


গতকাল, বিকেলে সুশান্ত মৃত্যু-তদন্তে নেমে মাদক যোগের অভিযোগে প্রয়াত অভিনেতার বান্ধবী তথা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে এনসিবি। সুশান্তের মৃত্যুর ৮৭ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।


এ নিয়ে ড্রাগ-কানেকশনের অভিযোগে রিয়া, তাঁর ভাই সৌভিক সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। এনডিপিএস আইনের ৫টি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


গতকাল গ্রেফতার করার পরই, রিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় সিয়ন হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য। তাঁকে আদালতে পেশ করে ১৪-দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের দাবি করে এনসিবি।


রিয়ার আইনজীবী পাল্টা জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু, তা খারিজ করে রিয়াকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। মঙ্গলবার এনসিবি হেফাজতেই রাত কাটান রিয়া। বুধবার সকালে তাঁকে বাইকুল্লা জেলে স্থানান্তরিত করার কথা।


প্রসঙ্গত, মুম্বই পুলিশ থেকে শুরু করে সিবিআই, ইডি ও এনসিবি-- এই চারটি তদন্তকারী সংস্থা এখনও অবধি জেরা করেছে রিয়াকে। এরমধ্যে মুম্বই পুলিশ ১১ ঘণ্টা, সিবিআই ৩৫ ঘণ্টা, ইডি ১৭ ঘণ্টা ও এনসিবি ১৯ ঘণ্টা ধরে রিয়াকে জেরা করেছে। সব মিলিয়ে ৮২ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রিয়াকে। তারপর ৮৭ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হয়।


এই পরিস্থিতিতে, গোটা বিষয়টিকে বিচারের নামে প্রহসন বলে কটাক্ষ করেছেন রিয়ার আইনজীবী। তিনি বলেন, রিয়ার এই গ্রেফতারি আসলে বিচারের নামে প্রহসন। ৩টি কেন্দ্রীয় এজেন্সি একজন মহিলাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে, কারণ, একজন মাদকাসক্ত, যিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, মুম্বইয়ের খ্যাতনামা পাঁচজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ যাঁর চিকিৎ‍সা করছিলেন, যিনি অবৈধভাবে ড্রাগ ও ওষুধ নেওয়ার ফলে আত্মহত্যা করেছেন, তাঁকে রিয়া ভালবাসতেন।





পাল্টা এনসিবি রিয়াকে গ্রেফতার করা মাত্র সুশান্তের বোন শ্বেতা ট্যুইট করে বলেছেন, ভগবান আমাদের সঙ্গে আছে। প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর সুশান্তের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান রিয়া। মুম্বই পুলিশের কাছে সুশান্তের দিদি প্রিয়ঙ্কা ও দিল্লির এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুয়ো প্রেসক্রিপশন তৈরি করে, সুশান্তকে ওষুধ খাওয়ানো অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।


এর আগে, রিয়ার গ্রেফতার হতে পারেন এমন আঁচ মেলায় এমনই কটাক্ষের সুর শোনা গিয়েছিল রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানেশিন্ডের গলায়। বলেছিলেন “কাউকে ভালবাসা যদি অপরাধ হয় তবে তার মূল্য দিতে প্রস্তুত রিয়া। প্রস্তুত গ্রেফতার হতেও।”


রিয়ার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীও কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন, ‘‘আমার ছেলেকে গ্রেফতার করার জন্য ভারতকে অভিনন্দন। আমি নিশ্চিত, এর পরেই আমার মেয়ের পালা।’’