হিন্দোল দে, পার্থপ্রতিম ঘোষ, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: স্টুডিওপাড়াতেও এবার থ্রেট কালচারের অভিযোগ। আর তার জেরে কাজ না পেয়ে, কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ করল পরিবার। টলিপাড়ায় থ্রেট কালচার এখন জলভাত হয়ে গিয়েছে, এমনটাই দাবি করছেন অনেক কলাকুশলীরাই। আর কেশসজ্জা শিল্পীর এই ঘটনা, স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে কয়েকমাস আগে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার। 


থ্রেট কালচারের চাপে কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ ঘিরে ফের তোলপাড় হয়ে উঠল টলিপাড়া। কিন্তু অনেকেই বলছেন, এই প্রথম নয়। স্টুডিওপাড়ায় যে থ্রেট কালচার সমানে চলছে। কয়েকদিন আগে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিষয়টি সামনে আসার পর তা স্পষ্টতই বোঝা গিয়েছিল। ফেডারেশনের নিয়ম না মেনে শ্যুটিং করার অভিযোগ উঠেছিল পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। আর তার পরই, রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন টেকনিশিয়ানরা। তাঁকে তিন মাসের কর্মবিরতির নির্দেশ দিয়েছিল পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। যার জেরে দিনের পর দিন বন্ধই থাকে শুটিং। 


সেই সময় রাহুল মুখোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন টলিউডের বহু পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে তখন এই কেশসজ্জা শিল্পীদের ব্যান করে দেওয়া নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ দেব। এই নিয়ে সেই সময়ে অভিনেতা সাংসদ বলেছিলেন, 'এরপর থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে কাউকে ব্য়ান করা যাবে না, এটা মাননীয় মুখ্য়মন্ত্রীর আদেশ। অসহযোগিতা করা যাবে না। আমার কাছে খবর আছে, অনেক হেয়ার ড্রেসারকে ব্য়ান করা হয়েছে। মেক আপ আর্টিস্টদের ব্য়ান করা হয়। শুধু এটা ডিরেক্টরদের জন্য লড়াইটা ছিল না। এই লড়াইটা প্রত্য়েকটা ডিপার্টমেন্টের জন্য।'সম্প্রতি আর জি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদ মিছিলেও দেখা গেছে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়দের। 


ইন্ডাস্ট্রির প্রবীণ অভিনেতা বিমল চক্রবর্তী বলছেন, 'আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এটা কী চলছে! এটা আমাদের ধারনা একটু তদন্তসাপেক্ষ। একটু খুঁজে বার করা দরকার। আমার কানে অনেকসময় এসেছে যে নানাভাবে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে। খুব হালকাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যেটা বুঝতে পারছেন যারা এই কাজকর্মগুলো করেন। যারা মেকআপ করেন, যারা হেয়ার ড্রেসারের কাজ করেন, কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় কথা এই থ্রেট কালচারটা কবে বন্ধ হবে?'


এই ঘটনায় সোচ্চার হয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন অভিনেতা ঋত্ত্বিক চক্রবর্তীও। সেখানে লেখা, 'ফেডারেশনের আওতায় থাকা ২৬ টি গিল্ড আদপে পাপেট। ফেডারেশনের মূল কার্যকরী কমিটির অঙ্গুলি হেলনে ও চাপে তারা এই সমস্ত ভ্রান্ত, আইনবিরুদ্ধ, খাপ পঞ্চায়েত সুলভ নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে বাধ্য থাকেন। সকল সহকর্মীদের কাছে আবেদন, কে কোন গিল্ডের বিচার না করে আসুন এই অশুভ আঁতাতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার সময় এসেছে।'


 



প্রথমে সরকারি হাসপাতাল। আর এবার স্টুডিওপাড়া। থ্রেট কালচার রোখার দাওয়াই কি আদৌ আছে? উঠছে প্রশ্ন। 


আরও পড়ুন: RG Kar Doctors: কথা রাখতে বন্যা-কবলিত এলাকায় 'অভয়া ক্লিনিক' নিয়ে হাজির কিঞ্জল-অনিকেতরা


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।