কলকাতা: সকাল থেকে ব্যস্ততায় সময় কেটেছে। ট্রেনে চড়ে বসার পর একটু ফাঁকা সময় পেলেন হাতে। অতএব মোবাইল ফোনের ওপার থেকেই জামাইষষ্ঠীর গল্প শুনতে হল। কিন্তু প্রথম জামাইষষ্ঠীতে ট্রেনে করে কোথায় চললেন রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় (Rudrajit Mukherjee) আর প্রমিতা চক্রবর্তী (Promita Chakraborty)? কোনও সফরে? নাহ.. বাড়ি ফিরছেন রুদ্রজিৎ। পুরুলিয়া। আগামীকাল বাবার বাৎসরিক কাজ যে..


গতবছর অসুস্থ হয়ে মারা যান রুদ্রজিতের বাবা। এই বছর তাঁর বাবার প্রথম বাৎসরিক। রুদ্রজিৎ বলছেন, 'এই বছর জামাইষষ্ঠী করার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। বাড়িতেই ঘরোয়া আয়োজন হয়েছিল। প্রমিতার বাড়িতে ওর মা সামান্য আয়োজন করেছিলেন। ওখানে খাওয়া দাওয়া করেই সোজা ট্রেনে উঠলাম। তার ফাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট।'


এটা কী বাধ্যবাধকতা? একটু হেসে রুদ্রজিৎ বললেন, 'আমরা যে চরিত্রে অভিনয় করি, অনুরাগীরা তাঁদেরই চেনেন। তাঁরা চান, সবসময় আমরা হাসিখুশি থাকব। ব্যক্তিগত জীবনে আমরা কেমন আছি সেটা জানতে চান না কেউ। যদি বিশেষ দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট না করি তাহলে অনুরাগীরা ভাবেন আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা হয়েছে বা আমরা কেউ অসুস্থ। আমার জন্মদিনেই এইরকম হয়েছিল। আমরা একটা রিসর্টে গিয়েছিলাম ছুটি কাটাতে। সেখানে যাওয়া, কেক কাটা স্বভাবতই একটু দেরি হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ভাগ করে নিতে। তাতে আমার আর প্রমিতার ফোনে সকাল থেকে কত মেসেজ। সবাই ভেবেছিল আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বা আমরা অসুস্থ।'


আরও পড়ুন: Jamai Sashti Exclusive: পাতে ইলিশ, চিংড়ি, মাংস, সপরিবারে সিনেমা, কেমন কাটল সঙ্গীতের জামাইষষ্ঠী?


গতবছরের স্মৃতি মনে পড়ে যায় রুদ্রজিতের। অভিনেতা বলেন, 'আমাদের পেশাটাই এমন। গতবছর এইসময় বাবা হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জবাব দিয়ে দিয়েছেন যে বাবাকে আর বাঁচানো যাবে না। তখনও আমায় ধারাবাহিকের জন্য শ্যুটিং করে, অডিও রেকর্ড করে পাঠাতে হয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রেকর্ড করতাম। একটা কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি। আর প্রতিবছর জামাইষষ্ঠীর সঙ্গে বাবার মৃত্যুদিনটা যেন জুড়ে গেল। এই বছর প্রথম বলে হয়তো একটু বেশিই খারাপ লাগছে।'


উপহারে প্রমিতার মায়ের জন্য শাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন রুদ্রজিৎ। তবে তাঁর ভাগের উপহার এখনও নেওয়া হয়নি। রুদ্রজিৎ বললেন, 'প্রমিতার বাবা-মাও সবটা বোঝেন। ওঁরাও বেশি আয়োজন করতে চাননি বাবার বাৎসরিকের আগের দিনটা। সোজা পুরুলিয়া ফিরব বলে আমি উপহারও নিতে পারিনি। এইবছর বাবার কাজটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিক থেকে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছি আমি আর প্রমিতা। কাজ মিটিয়ে আবার শ্যুটিং শুরু করব কলকাতায় ফিরে।'