মুম্বই : "প্রচণ্ড আগ্রাসী ছিল হামলাকারী। সেফের ওপর বারবার আঘাত করছিল।" ভয়াবহ সেই ঘটনার কথা মুম্বই পুলিশকে এই ভাষাতেই জানিয়েছেন স্ত্রী ও অভিনেত্রী করিনা কপূর খান। হামলাকারীকে পাকড়াও করতে আরও তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। এর আগে ক্রাইম ব্রাঞ্চ সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, সম্পূর্ণ তথ্য দিচ্ছে না বান্দ্রা পুলিশ। ঘটনার ৫ ঘণ্টা পর জানানো হয়েছিল ক্রাইম ব্রাঞ্চকে। তখন প্রশ্ন ওঠে, মুম্বই পুলিশ ও ক্রাইম ব্রাঞ্চের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই কি গ্রেফতার করা যাচ্ছে না ? এবার কি তবে সেই অপেক্ষার অবসান হল ? হামলকারীর খোঁজে তদন্তে নামে মুম্বই পুলিশের ২০ টি দল। টানা দুই দিনের দৌড়াদৌড়ির পর সেফের ওপর হামলার ঘটনায় এক সন্দেহভাজনকে অবশেষে আটক করা হল। ছত্তীসগঢ় থেকে তাকে পাকড়াও করা হয়েছে। দুর্গ রেলস্টেশন থেকে সন্দীপ ওরফে আকাশকে পাকড়াও করা হয়।

RPF-এর সূত্র একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেছে, মুম্বই পুলিশের লিডের ভিত্তিতে মুম্বই-হাওড়া জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস থেকে সন্দেহভাজনকে ধরা হয়। দুপুর ২টো নাগাদ ট্রেন দুর্গে পৌঁছতেই, জেনারেল কামরায় বসে থাকা সন্দেহভাজন নেমে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মুম্বই পুলিশ সন্দেহভাজনের ছবি, ট্রেন নম্বর ও লোকেশন পাঠিয়েছিল আরপিএফের কাছে। যার ভিত্তিতে তাকে ধরা হয়। এই মুহূর্তে আরপিএফের হেফাজতে রয়েছে সে। বিষয়টি জানানো হয় মুম্বই পুলিশকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই সন্দেহভাজন কি না তা নিশ্চিত করতে এরপর পুলিশের একটি দল দুর্গের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। 

ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিক বার আঘাত করা হয় বছর ৫৪-র অভিনেতাকে। ঘাড় ও স্পাইনের কাছে মারাত্মক আঘাত লাগে তাঁর। পোশাক ভিজে গেছিল রক্তে। সেই অবস্থায়, সাত বছরের ছেলে তৈমুরকে নিয়ে, অটোয় চেপে, কোনওমতে লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন সেফ আলি খান। একটি অটোরিকশয় তাঁকে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার চলে। এখন তিনি দ্রুত সেরে উঠছেন। এমনই জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসকরা। 

ঘটনার রাতে বাড়িতেই ছিলেন করিনা। পার্টি থেকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর বয়ানও রেকর্ড করেছে মুম্বই পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে ওই রাত নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছেন করিনা। তিনি জানিয়েছেন, ওই দুষ্কৃতী অত্যন্ত আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল। সেফকে সে এলোপাথাড়ি কোপায়। কিন্তু গয়নাগাঁটি বাইরে ছড়ানো থাকলেও, কিছুতে হাত দেয়নি। (Kareena Kapoor Khan)

করিনার বয়ান অনুযায়ী, তাঁদের ছোট ছেলে জেহ্-র ঘরেই প্রথমবার দুষ্কৃতীকে দেখা যায়। গৃহ সহায়িকা সকলকে সতর্ক করেন। সরাসরি জেহ্-র দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল ওই দুষ্কৃতী। বিষয়টি উপলব্ধি করেই ঝাঁপিয়ে পড়েন সেফ। ওই দুষ্কৃতী যাতে জেহ্-র কাছে কোনও ভাবেই পৌঁছতে না পারে, মহিলাদের কেউ যাতে আহত না হন, সেই চেষ্টা চালিয়ে যান সেফ। জেহ্কে বাঁচান তিনি। এই ঘটনা গোটা বিশ্ব জানে তার পরের দিন। তোলপাড় পড়ে যায়। খোঁজ শুরু হয় দুষ্কৃতীর। এরপর একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, মুম্বই পুলিশের কাছে খবর আসে যে এক্সপ্রেস ট্রেনে যাচ্ছে সন্দেহভাজন দুষ্কৃতী। আরপিএফের কাছে খবর পাঠানো হয়।