সুশান্তকে সম্বোধন করে ক্যাপশানে লিখেছেন, ''দুঃখিত ভাই, আমি নীরব থাকলে মানুষের কাছে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আজ আমি আমাদের পার্সোনাল চ্যাটগুলো সকলকে পড়তে দিচ্ছি। কারণ, এটিই একমাত্র আমাদের বন্ধুত্বের গভীরতার প্রমাণ দেবে।''
সুশান্তের সঙ্গে হওয়া বেশ কিছু কথোপকথন প্রকাশ করেছেন সন্দীপ। এসব চ্যাট হয়েছিল ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর এবং ২০১৮ সালের ১৪ জুন। তাতে দেখা যাচ্ছে 'কেদারনাথ' ছবিটি দেখতে যাওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে সুশান্তের কথা হয়েছে। একটি চ্যাটে সুশান্ত সন্দীপকে লোনাওয়ালা রিসর্টে আড্ডা দিতেও ডেকেছেন।পাশাপাশি সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর মীতু দিদি ও জামাইবাবুর সঙ্গে হওয়া কিছু হোয়াটসঅ্যাপও প্রকাশ করেছেন সন্দীপ । ক্যাপশানে লিখেছেন, ''সুশান্তের শোকাহত বোনের পাশে আমি দাঁড়িয়েছি, এটাই কি আমার দোষ? প্রশ্ন উঠছে কেন আমি অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে কথা বলেছি? সেটাও আমি প্রকাশ্যে আনছি।''
অ্যাম্বুলেন্স প্রসঙ্গে অভিমানের সুরে সন্দীপের ব্যাখ্যা, ''পুলিসের তরফে আমার নম্বর অ্যাম্বুলেন্স চালককে দেওয়া হয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্স চালক আমার কাছে টাকা চাইতে ফোন করেছিলেন। আমি বলি, টাকা পেয়ে যাবেন। পরে আমার সহকারী ওঁকে টাকা দিয়ে দেয়। আমি কি এই পরিস্থিতিতে সুশান্তের দিদির কাছে টাকা চাইতে যেতাম!''
সন্দীপ ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ''১৪ ই জুন খবর শুনে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। আমি ওখানে ছুটে গিয়ে দেখি মীতু দিদি ছাড়া আর কেউ নেই। আমি হতবাক হয়ে যাই। আমি এখন ভাবছি, ওই কঠিন সময়ে সুশান্তের বোনের পাশে দাঁড়িয়ে ভুল করেছি? আমার কি অপেক্ষা করা উচিত ছিল, যে অন্যরা আসুক, তারপর যাবো।''
১৪ জুন ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে সন্দীপ জানিয়েছেন, ''আমার সঙ্গে গত এক বছর সুশান্তের যোগাযোগ ছিল না ঠিকই। কিন্তু ওর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ২০১১ সাল থেকে। ওর মৃত্যুর খবর বিশ্বাসই করতে পারিনি প্রথমে। ঠিক কী ঘটেছে তা জানতে ছুটে যাই। মহেশ শেঠিকে ফোন করি, মহেশের গাড়িতেই সুশান্তের ফ্ল্যাটে যাই। পুলিস ফ্ল্যাটে ঢুকতে অনুমতি দেয়নি, আমরা বাইরেই অপেক্ষা করি।‘
সন্দীপ আরও বলেন,’ সুশান্তের দেহ যখন নামানো হল, আমি আর মহেশ নিচে ছিলাম। দেহ কুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরে পুলিসের অনুমতি নিয়ে আমরা সুশান্তের ফ্ল্যাটের ভিতরে বসেছিলাম। কুপার হাসপাতাল থেকে পুলিস ফোন করে পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে বলে। মীতু দিদি পরিচয়পত্র বের করেন, তারপর আমি দিদিকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। আমি যা যা করেছি তার মধ্যে তো কোনও অস্বাভাবিক ব্যাপার নেই!''
মোটের উপর অনেকগুলি প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেলেন সন্দীপ। আবার সুশান্তের সঙ্গে তাঁর চ্যাটগুলি তাঁকে সন্দেহের তালিকা থেকেও দূরে সরিয়ে রাখতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন অনেকে। সন্দীপের প্রকাশিত চ্যাট ও সাক্ষাৎকারের বক্তব্য নজরে রেখেছে সুশান্ত তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিবিআই।