কলকাতা: রুপোলি পর্দার ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ তিনি। কিংবদন্তি। তিনি যে সময়ে, যে পরিস্থিতিতে, ছবি পরিচালনার মূল ধারার স্রোতের বিপরীতে হাঁটার সাহস করেছিলেন, তা তৎকালীন বাঙালির কাছে কার্যত অকল্পনীয় ছিল। সত্যজিৎ রায় (Satyajit Roy)। আক্ষরিক অর্থেই তিনি বাঙালির মণিমাণিক্য.. মানিক। রাত পোহালেই তাঁর জন্মদিন। আর জন্মদিনের আগে, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে নিজের এক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)। 


আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু টুকরো ভিডিও শেয়ার করে নিয়েছেন প্রসেনজিৎ। সেখানে তাঁরই কন্ঠে শোনা গেল, 'এই মহান মানুষটাকে নিয়ে কথা বলার মতো কোনও যোগ্যতা আমার নেই। আমার শ্রদ্ধা, আমার প্রণাম। কিন্তু একটা ছোট্ট ঘটনা আমি বলতে চাই, সেটা ভীষণ ব্যক্তিগত। যে বাড়িটায় ঢুকতে প্রচুর মানুষ ভয় পায়, ঠিক সেভাবেই ভয় পেয়ে আমিও গিয়েছিলাম সেখানে। আমার বোনের বিয়ের একটা কার্ড দিতে। তখন আমার ১৬ কি ১৭ বছর বয়স। আমি বেল দিলাম। দরজাটা খুললেন মানিক জ্যেঠু, মানে আমাদের সবার প্রিয় সত্যজিৎবাবু। আমি ভেবেছিলাম, কার্ডটা মানিক জ্যেঠু দরজা থেকেই নিয়ে নেবেন। আমার বোনের বিয়ে, আমি নেমতন্ন করলাম, তারপরেই আমি বেরিয়ে আসব। কিন্তু উনি আমায় ভিতরে নিয়ে গেলেন, জল খাওয়ালেন, কথা বললেন। এবং সেই কথাগুলো সিনেমা সংক্রান্ত নয়। একেবারে ব্যক্তিগত কথা। মা কেমন আছেন বোন কেমন আছেন... আজ যখন সেই ঘটনার কথা মনে করি, বুঝতে পারি কেন তিনি অন্যতম সেরা একজন পরিচালক। উনি বোধহয় আমার মনের অবস্থাটা বুঝতে চেয়েছিলেন। একটা ১৭ বছরের ছেলে একা এসে তাঁর বোনের বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্র দিচ্ছে। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে, ওঁর ওই সময়টুকু আমার কাছে একটা বিশাল অনুপ্রেরণা ছিল। আসলে এঁরা এত বড় মাপের মানুষ, এত বড় মাপের পরিচালক এইজন্যেই.. ওঁরা একটা মানুষের ভিতরটা বুঝতে পারেন। সেইসময় বুঝিনি। তখন ওটা আমার কাছে উত্তেজনা। পরবর্তীকালে বুঝেছিলাম, মানুষটা ওইটুকু সময় যে আমায় দিলেন... ২০-২৫ মিনিট, সেটা যেন কোথাও উনি আমায় একটা অদ্ভূতভাবে শক্তি যোগালেন। আপনাকে আমার প্রণাম, শ্রদ্ধা.... সবসময়। '


আরও পড়ুন: Fennel Seeds: ওজন কমাতে কীভাবে সাহায্য করে মৌরী? রোজের মেনুতে উপকরণ রাখলে আর কী কী উপকার পাবেন?