কলকাতা: হাত ধরে ক্ষেত দিয়ে ছুটে যাচ্ছে দুই ভাই-বোন। অথবা সেই বৃষ্টিতে ভেজার দৃশ্য.. গ্রামের বৃষ্টিতে মন জুড়নো সেই ছবি। অথবা সেই মায়ের কাছে মার খাওয়ার দৃশ্য। প্রত্যেকটা দৃশ্যকেই জীবন্ত করে তুলেছিলেন তিনি। সেই ছবি বসে রয়েছে দর্শকদের মনে-প্রাণে। 'পথের পাঁচালি'। সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Roy) কালজয়ী সিনেমা। সেই ছবিতে দুর্গার ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছিলেন, তিনি উমা দাশগুপ্ত। শেষ হয়ে গেল 'পথের পাঁচালি'-র এক অধ্যায়। প্রয়াত সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালির 'দুর্গা', উমা দাশগুপ্ত।
আজ প্রয়াত হয়েছেন সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালির 'দুর্গা', উমা দাশগুপ্ত। সোমবার সকাল আটটা চল্লিশ নাগাদ বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে। তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। সপ্তাহখানের ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই থিয়েটার করতেন উমা দাশগুপ্ত। স্কুলে পড়ার সময় তাঁর অভিনয় দেখেই সত্যজিৎ রায় তাঁকে। বেছে নিয়েছিলেন পথের পাঁচালির দুর্গার চরিত্রটির জন্য। প্রথম ছবিতে অভিনয় করেই বাংলা সিনেমার ইতিহাসে জায়গা করে নেন তিনি। তবে সিনে-দুনিয়ার লাইম লাইট থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করতেন উমা দাশগুপ্ত।
কয়েক বছর আগে ক্যানসার হয়েছিল উমা দাশগুপ্তের। চিকিৎসা চলছিল। প্রাথমিকভাবে তিনি সাড়াও দিয়েছিলেন চিকিৎসায়। সুস্থ হয়ে ফের শুরু করে স্বাভাবিক জীবন যাপন। তবে কয়েক বছর আগেই আবার ফিরে আসে মারণ-রোগ। আর লড়াইয়ে পেরে ওঠেননি উমা। ক্যানসারের কাছে হার মানলেন তিনি। প্রথম ছবির পরে আর রুপোলি পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে। রূপোলি পর্দা থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করতেন অভিনেত্রী। নিজের মতো করে জীবন সাজিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। সংসার করতেন। কন্যসন্তান ছিল তাঁর।
এর আগে একাধিকবার উমা দাশগুপ্তের মৃত্যুর ভুয়ো খবর ছড়িয়েছে। শোনা গিয়েছিল তিনি নাকি বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন। তবে সেই সমস্ত খবর ভুয়ো। কিন্তু এবার সত্যি হল তাঁর মৃত্যুর খবর। যে অভিনেত্রী মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার জন্য কেবল একটি সিনেমাই যথেষ্ট, আজ প্রয়াত হলেন সেই কিংবদন্তি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।