কলকাতা: প্রথমে সেই ঘরটা ছিল দাদুর চেম্বার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভোল বদলে সেটা হল বাবার বৈঠকখানা। কিন্তু বছরের এই একটা দিন বাসন্তী সাজে সেজে ওঠে ঘরটা। বরানগরের পুরনো বাড়ির একতলার ঘরে সরস্বতী পুজো করতে আসতেন কালীবাড়ির পুরোহিত। শিকলি বানানো হত, মা ভোগ রান্না করতেন... বসন্ত পঞ্চমীর সকাল মানে এক রাশ ছোটবেলা। এবিপি লাইভের সঙ্গে ছোটবেলার সরস্বতী পুজোর (Saraswati Puja) ছবি ভাগ করে নিলেন পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboprosad Mukherjee)। 


ছোটবেলার স্কুলের পুজো বলতে বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনের পুজো। শিবপ্রসাদ বলছেন, ছোটবেলার সরস্বতী পুজোর অন্যতম আকর্ষণ ছিল স্কুলের নাটক। অনেকদিন আগে থেকে রিহার্সাল চলত। ক্লাস কামাই করে নাটকের মহড়া দেওয়ার স্মৃতিগুলো মনে থাকবে চিরকাল। শিক্ষক আর ছাত্র একসঙ্গে অংশ নিতেন .এই নাটকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'ছাত্রের পরীক্ষা' মঞ্চস্থ করেছিলাম একবার। এছাড়াও 'চোখে আঙুল দাদা', 'মুকুট', 'ভাড়াটে চাই'-এর মত নাটক হত। বছরে অনেকগুলো নাটক হত স্কুলে। আর সবেতেই আমি অংশ নিতাম। ক্লাসের শুরুতে কেবল ক্রমিক সংখ্যাটা শিক্ষককে বলে বেরিয়ে যেতাম। নাটকের রিহার্সাল চলার কয়েকটাদিন আমরা যেন স্কুলের বিশেষ ছাত্র। কয়েকজন স্যর আবার বলতেন, পড়াশোনা তুলে দাও।' কথা শেষ করেই হেসে ফেললেন পরিচালক।


আরও পড়ুন: Darshana Banik Exclusive: সরস্বতী পুজোর দিন স্কুলের এক গেটে মায়েরা থাকতেন, অন্য গেটে বয়ফ্রেন্ড: দর্শনা বণিক


কেবল নাটক নয়, সরস্বতী পুজোর আরও এক আকর্ষণ ছিল, অন্যান্য স্কুলে নেমন্তন্ন করতে যাওয়া। শিবপ্রসাদ বলছেন, 'মেয়েদের স্কুলে কে নেমন্তন্ন করতে যাবে সেটা নিয়ে একটা প্রতিযোগীতা চলত ছাত্রদের মধ্যে। প্রথমবার মেয়েরা শাড়ি পরবে, দেখতেই ভালো লাগত। আর হ্যাঁ, বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনে অনেকে পুজো দিতে আসতেন। অঞ্জলির ফুল দেওয়ার দায়িত্ব পড়ত আমাদের ওপর। সরস্বতী পুজো মানে, যাকে পছন্দ হবে তার হাতে অঞ্জলির ফুলটা তুলে দিতে পারাটা অন্যরকম ভালোলাগা। সে আমার হাতের ফুল দিয়ে অঞ্জলি দিচ্ছে, ছোটবেলার সেই অনুভূতিটা ভোলা যাবে না কখনও।