মুম্বই: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতদন্তে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিহার পুলিশ। ঠিক কোনপথে এগোচ্ছে তদন্ত, তা জানতে চেয়ে সরব হন সুশান্ত অনুরাগীরা। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংহ এই বিষয় নিয়ে একাধিক চমকে দেওয়া তথ্য প্রকাশ্যে আনেন। তাঁর দাবি, সুশান্তের মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য গ্যাজেট খতিয়ে দেখা চলছে।


তদন্তে দেখা গেছে, সুশান্ত তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন আগে থেকে নিজের নাম দিয়ে গুগল সার্চ করেন। সেই সঙ্গে বিস্তারিত সার্চ করেন যন্ত্রণাহীন মৃত্যু নিয়ে। শুধু তাই নয় স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া, ডিপ্রেশন ইত্যাদি নিয়েও ইন্টারনেটে পড়াশুনা করেন সুশান্ত। সার্চ হিস্ট্রি বলছে, সুশান্ত বাইপোলার ডিজঅর্ডার নিয়েও পড়েছেন ইন্টারনেটে। দাবি পুলিশকর্তার।

এর আগেও মুম্বই পুলিশ দাবি করে, বাইপোলার ডিসর্ডার-এ ভুগছিলেন সুশান্ত। তাঁর চিকিৎসা করা অন্তত তিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞই এই তত্ত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। অন্য চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন, সুশান্তের জীবন ভীষণই চাপযুক্ত ছিল। মুম্বই পুলিশের এক আধিকারিক জানান, জেরা পর্বে উঠে এসেছে যে, দুই থেকে তিনটি ভিজিটের পরই চিকিৎসক বদলাতেন সুশান্ত। চার মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তিনজন এই কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওই আধিকারিক।

তাছাড়াও পুলিশকর্তা পরমবীর সিংহ জানান, এ বছর জুন পর্যন্ত সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা। দেখা গেছে, একটি চার কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজ়িটও ছিল অভিনেতার। তবে বড় কোটি-কোটি টাকা রিয়া চক্রবর্তী আত্মসাৎ করেছেন বলে যে দাবি উঠেছে পরিবারের তরফে তার কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাননি তাঁরা।

আজ কে কে সিংহ আরও দাবি করেছেন যে, সুশান্তের কোনও বড় বিপদ হতে পারে এই আশঙ্কা প্রকাশ করে গত ফেব্রুয়ারিতেই তিনি বান্দ্রা থানার পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন। প্রায় দেড় মাস ধরে মুম্বই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা দেখার পরেই পটনা পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

মুম্বই পুলিশ ইতিমধ্যেই সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী, পরিচালক-প্রযোজক সঞ্জয় লীলা ভনশালী, আদিত্য চোপড়া এবং মহেশ ভট্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর বাবা, বোন এবং জামাইবাবুর বয়ানও রেকর্ড করেছে মুম্বই পুলিশ। এদিকে সুশান্তের বাবার এফআইআর-এর ভিত্তিতে বিহার পুলিশও মুম্বইয়ে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে! যদিও, রিয়া এবং তাঁর পরিবারের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি বিহার পুলিশের।

বিহারের ডিজিও একদিন আগেই বলেন, রিয়া চক্রবর্তীর উচিত সামনে আসা এবং বলা, যে চাইবে তাঁকে প্রশ্ন করতে পারে। লুকোচুরি কেন খেলছেন রিয়া? তবে, রিয়ার আইনজীবীর দাবি, রিয়া নিখোঁজ, বিহার পুলিশের এই যুক্তি মোটেও মেনে নেওয়া যায় না।