মুম্বই: সুশান্ত সিং রাজপুতকে ভদ্র, নিষ্পাপ, একজন খুব ভাল মানুষ বলে উল্লেখ করল বম্বে হাইকোর্ট।  বিচারপতিদ্বয় এস এস শিন্দে ও এম এস কার্নিককে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছে, ওনার মুখের দিকে তাকালেই যে কেউ বলবেন, উনি নিরপরাধ। সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর দায়ের করা এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রয়াত অভিনেতার দুই বোন যে আবেদন করেছেন, তার শুনানির সময় এমনই অভিমত জানিয়েছে আদালত।


রিয়াকে বলিউডে মাদক পাচার চক্রের রমরমা নিয়ে দায়ের হওয়া এক মামলার তদন্তে গ্রেফতার করেছিল নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। জামিনে মুক্তি পেয়ে জেলের বাইরে এসেই গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রয়াত অভিনেতার দুই বোন প্রিয়ঙ্কা, মিতু ও দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে কোনও চিকিত্সককে না দেখিয়েই মাদক এনে দেওয়ার অভিযোগে এফআইআর করেন তিনি।

সুশান্তকে গত ১৪ জুন তাঁর মুম্বইয়ের বাসভবনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে মুম্বই পুলিশ জানিয়ে দিলেও এর পিছনে কোনও রহস্য আছে কিনা, জানতে তদন্ত করছে সিবিআই।

সুশান্তের বোনেদের হয়ে তাঁদের পারিবারিক আইনজীবী বিকাশ সিংহ সওয়াল করেন, হতে পারে আইসিএমআরের বেঁধে দেওয়া টেলিমেডিসিন গাইডলাইন অনুসারেই ডাক্তাররা ওইসব ওষুধ সুপারিশ করেছিলেন। এটা সিবিআইয়ের তদন্ত করা মূল মামলার অংশ বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে রিয়ার হয়ে তাঁর আইনজীবী সতীশ মানেশিন্দে বলেন, রিয়া জানতেন, সুশান্ত ওষুধ খেতেন, যা নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়েছিল, কিন্তু সেসময় ওই প্রেসক্রিপশনের কথা তিনি জানতেন না। সোস্যাল মিডিয়ায় সেটি লিক হওয়ার পরই রিয়া বুঝতে পারেন, সেটা সুশান্তের বোনেদের আনা।  রিয়ার বিবৃতি পাঠ করে মানেশিন্দে বলেন, আমি ওর ঘরের কাজের লোককে বলি, ও যেসব ওষুধ খায়, সেগুলির সঙ্গে মাদক মেশায়। এটা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। প্রেসক্রিপশনটা সোস্যাল মিডিয়ায় বেরিয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারে, এর পিছনে ওর বোনেদের পরামর্শ আছে।  আমার  মনে হয়, এটা ওর আত্মহত্য়ার কারণ হতে পারে। আমি আমার অভিযোগনামায় বলেছি, এইসব ওষুধ এমন একজন ডাক্তার সুপারিশ করেছেন, যিনি আগে কখনও সুশান্তকে কোনও ওষুধই দেননি। ওকে শারীরিক ভাবে না দেখেই ওষুধগুলি সুপারিশ করা হয়েছিল। ডাক্তারের সঙ্গে  আগাম পরামর্শ করেই টেলিমেডিশন সুপারিশ করা যায়।

রিয়ার তরফে মানেশিন্দে আরও বলেন, আমার অভিযোগ একটি জাল ওষুধের প্রেসক্রিপশন  নিয়ে। আমি যে পরিস্থিতি, প্রেক্ষাপটের দিকে ইঙ্গিত করছি, সেটাও তদন্ত করা উচিত। ওর পরিবার ওর মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিচলিত। ওরা আমায় দায়ী করছে। আমি ভিন্ন এক প্রেক্ষাপট তদন্ত করে দেখতে বলছি।

হাইকোর্ট অবশ্য রায়দান স্থগিত রেখে সব  পক্ষকেই  লিখিত বক্তব্য জমা দিতে বলেছে।