অতসী মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: খবর মিলেছিল আগেই। অপর্ণা সেন (Aparna Sen) অভিনীত চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী অর্কজা আচার্য (Arkaja Acharya)-কে। 'আকাশ ৮' -এ 'সাহিত্যের সেরা সময়'-এ হাজির হয়েছে 'কড়ি দিয়ে কিনলাম' (Kori Diye Kinlam)। আর সেই ধারাবাহিকের সেটেই বসল জমাটি আড্ডা।
'কড়ি দিয়ে কিনলাম' ধারাবাহিকের সেটে আড্ডা
কড়ি দিয়ে সব কিছু কি কেনা যায়? এমন অনেক জিনিসই তো থাকে যার মূল্য নির্ধারণ সম্ভব নয়, বা যা কড়ি দিয়ে কেনা যায় না! ধারাবাহিক 'কড়ি দিয়ে কিনলাম'-এ লক্ষ্মীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন অর্কজা। সতীর চরিত্রে অভিনয় করছেন সুশ্রিতা। আর দীপুর ভূমিকায় অভিনয় করছেন অর্ণব। শ্যুটিংয়ের অবসরে ধারাবাহিক থেকে শুরু করে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে জমজমাট আড্ডা দিলেন তিনজনে।
বাঙালির আড্ডায় সাহিত্য নিয়ে চর্চা থাকবেই। অন্যথা হল না এক্ষেত্রেও। বইয়ের পাতা থেকে চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তোলার প্রস্তুতি কেমন ছিল? অর্কজার উত্তর, 'আমাদের ধারাবাহিকটা মূলত উপন্যাসটিকে কেন্দ্র করেই তৈরি হচ্ছে। সিনেমাকে কেন্দ্র করে নয়। সেই কারণে উপন্যাসটা পড়া দরকারি। সেই সঙ্গে সিনেমাটা দেখাও অবশ্য প্রয়োজন ছিল কারণ উপন্যাসটি প্রায় ১৪০০ পাতার। ফলে ধারাবাহিকের কাজ শুরুর আগেই যে পুরো উপন্যাসটা পড়ে ফেলতে পেরেছি এমনটা হয়নি। তাই সিনেমাটি বারবার দেখেছি। আমাদের চিত্রনাট্যকারের সঙ্গে, পরিচালক সজল দার সঙ্গে বারবার কথা বলেছি। সজল দা প্রত্যেক ক্ষেত্রেই খুবই সাহায্য করছেন ফলে অসুবিধা হচ্ছে না।' একইসঙ্গে অর্কজা বলেন, 'আমার আগের সিরিয়ালটাও সাহিত্য নির্ভর ছিল কিন্তু সেটা অনেকটা সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তৈরি ছিল, তাই ব্যাপারটা আলাদা। এক্ষেত্রে উপন্যাসটাই ফুটিয়ে তোলা। মূলত ভাষার ক্ষেত্রেই, সেটাকে আয়ত্তে আনতেই, আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। তবে সবমিলিয়ে মোটামুটি হয়ে যাচ্ছে।'
এই প্রথম সাহিত্য নির্ভর ধারাবাহিকে কাজ করছেন অর্ণব। তিনি বলছেন, 'এটা আমার অনস্ক্রিন প্রথম উপন্যাসের চরিত্রে কাজ। প্রথম লিড চরিত্র। ফলে সেটা একটা টেনশন আছেই। কিন্তু সজল দা আছেন, সেটাই বাঁচোয়া।'
নিজের চরিত্র নিয়ে সুশ্রিতা বললেন, 'আমার চরিত্রতে কাজ করতে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে। একজন মুখরা মেয়ে, সবসময় দিদির সঙ্গে ঝামেলা লেগেই আছে। অসুবিধা হচ্ছে ভাষার ক্ষেত্রে। যেহেতু ওই ভাষায় আমরা সচরাচর কথা বলি না এবং সেই সময়ের চরিত্রে নিজেদের নিয়ে যাওয়া, সেটা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা খানিকটা কঠিন তো বটেই।'
শ্যুটিং সেটের কোন অজানা গল্প শোনালেন অর্কজা? অভিনেত্রীর কথায়, 'আমাদের তিনজনের সিন সবেমাত্র শুরু হয়েছে। অর্ণব খুবই শান্ত ছেলে, একেবারে দীপুর মতোই। অত্যন্ত নিষ্ঠাবান অভিনেতা, ওকে সামলানোর জন্য সত্যি কাউকে প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু একটা দৃশ্য আছে যেখানে আমি আর সতী, দীপুকে নিয়ে রীতিমতো টানাটানি করছি।' (হাসি)
আড্ডায় এবার খানিক খেলার পালা। দার্জিলিং নামটা শুনলে প্রথমেই কার কী মনে আসে? অর্কজার সপাট জবাব, 'কেভেন্টার্স'। দীপুর উত্তর, 'গ্লেনারিজ'। আর সুশ্রিতার মনে পড়ল, 'মোমো'। পাহাড় থেকে নেমে এবার সমুদ্র সৈকত। মন্দারমণি শুনলে অর্কজার মাথায় আসে, 'মন্দারমণি আমি যাইনি। কিন্তু সমুদ্র বললে আমার পুরীর কথা মনে পড়ে। সমুদ্র সৈকত, সেখানে সারাদিন বসে থাকা। সামুদ্রিক হাওয়া, হারিয়ে যাওয়া।' দীপুর অবশ্য সমুদ্র সৈকত শুনলেই, 'বালির ঘর তৈরি করা'র কথা মনে হয়। সুশ্রিতা অবশ্য খাওয়া দাওয়াতেই আটকে। সমুদ্র সৈকত শুনলে তাঁর 'মাছভাজা'র কথা মনে পড়ে। 'কড়ি দিয়ে কিনলাম' বললেই অর্কজার মনে আসে 'খুব ইন্টারেস্টিং ও এক্সপেরিমেন্টাল একটি কাজ। এক শব্দে এটা বলতে পারব না কারণ একটা বিশাল একটা প্রজেক্ট যার গুরুদায়িত্ব রয়েছে আমাদের ওপর।' অর্ণবের মতে, 'কড়ি দিয়ে সবকিছু কেনা যায় না'। সুশ্রিতার অবশ্য ধারাবাহিকের নাম শুনে প্রথমেই নিজের চরিত্রের কথা মনে পড়ে। তাঁর কথায়, 'এই চরিত্রটা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ'।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন
https://t.me/abpanandaofficial
এই গল্পে লক্ষ্মীর ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে অর্কজাকে। সতীর চরিত্রে রয়েছেন সুশ্রিতা ঘোষ। দীপুর ভূমিকায় রয়েছেন অর্ণব বিশ্বাস।