কলকাতা: আলোর নিচেই কী সবচেয়ে বেশি অন্ধকার? একের পর এক অভিনেত্রীর মৃত্যু যেন এই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। প্রথমে পল্লবী দে, তারপর বিদিশা দে নাগ আর আজ মঞ্জুষা নিয়োগী। ১২ দিনে ৩ জন। ১৫ মে গরফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় অভিনেত্রী পল্লবী দের ঝুলন্ত দেহ। দুদিন আগে নাগেরবাজারে ফ্ল্যাট থেকে মডেল অভিনেত্রী বিদিশা দে মজুমদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। আজ সকালে পাটুলির বাড়ি থেকে উদ্ধার বিদিশার বন্ধু অভিনেত্রী-মডেল (Actress Model) মঞ্জুষা নিয়োগীর (Manjusha Nuyogi) ঝুলন্ত মৃতদেহ।


কিন্তু কেন বার বার অভিনেত্রীরা বেচে নিচ্ছেন এই চরম পথ? সমাজতাত্ত্বিক অভিজিৎ মিত্র বলছেন, মানুষ একা হয়ে যাচ্ছে। এর দায় সমাজেরও। গ্ল্যামার নয়, চাকরি নেই, সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে হতাশা।'


আরও পড়ুন: Boney Kapoor Updates: সাইবার প্রতারণায় লক্ষাধিক টাকা খোওয়ালেন বনি কপূর


মঞ্জুষার মৃত্যু নিয়ে নিজের মতপ্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদারও। অভিনেত্রীকে ফোনে ধরা হলে তিনি বলেন, 'ঘটনাগুলো খুবই খারাপ। এগুলো তো মানুষকে আরও বিধ্বস্ত করে তোলে। বিশেষত অভিনয়কে যাঁরা পেশা হিসেবে এখন বেছে নিচ্ছেন। একটা সময় ছিল যখন অভিনয়কে পেশা করা যায় সেটাই কেউ ভাবতে পারতেন না। অভিনয় যে একটা সিরিয়াস পেশা হতে পারে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটা ছেলেমেয়েরা ভাবতে শুরু করেছে।'


তিনি আরও বলেন, 'আমার মনে হয়, শুধু অভিনয় পেশার সঙ্গে যুক্তরাই নন, এখনকার জেনারেশনের মধ্যে সহনশীলতা, ধৈর্য্য সেটা বোধ হয় সাধারণভাবেই কম। এখন যে একটা ছোঁয়ায়, একটা মেসেজে বা একটা রিলে কোটি কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়, সেটার ফলে পৃথিবীটা ছোট হয়ে গেছে। সবকিছুই একটু তাড়াতাড়ি হয়ে যায় এখন। ফলে এখনকার ছেলেমেয়েদের কাছে প্রেম বিচ্ছেদ, সাফল্য, পতন, ডিপ্রেশন, সেই থেকে সবকিছুই যেন খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। এই সবকিছুই তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে অনেকেই ব্যালেন্সটা হারিয়ে ফেলে। সিনেমায় একটা কথা বলে, সাইলেন্স আর ব্যালান্স খুব জরুরি। এই দুটোর মধ্যে তারতম্য যখনই হারিয়ে যায় তখনই এমন ঘটনা দেখা যায়। যেটা আমি একেবারেই সাপোর্ট করি না। ডিপ্রেশন, উত্থান পতন কেবল অভিনয় বলে না, জীবনের সবকিছুতেই থাকবে। আমাদের সাধারণ জীবনও কখনও একরকম চলে না সবসময়ে। তা বলে জীবন নষ্ট করে ফেলব? তা বলে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করব? এটা কাজের কথা নয় কোনও। এটা কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন।'