কলকাতা: শীঘ্রই জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ক্লিকে (Klikk) মুক্তি পেতে চলেছে শুভ্র রায় পরিচালিত ছবি 'ঘুণ' (Ghun)। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দেখা যাবে ছবিটি। শহর কলকাতার ছয় নারী, পুরুষ ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ঘিরে এই গল্প আবর্তিত হয়। 


ছবির এক চরিত্র বিক্রম একজন বহুজাতিক সংস্থার বড় কর্তা। বিপত্নীক বিক্রমের কাছে তার একমাত্র মেয়ে সিমির জন্য কোনও সময় নেই। চরিত্রের দিক থেকেও বিক্রম ভীষণ স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক। সে নিজের অফিসের এক মহিলা কর্মচারী, পুনমকে বিদেশে প্রোমোশনের লোভ দেখিয়ে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। পুনমও ঠিক বিক্রমের মতোই স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক। সে নিজের প্রোমোশনের লোভে বিক্রমের সঙ্গে সব রকম আপোস করে স্বেচ্ছায়। 


অন্যদিকে পুনমের সঙ্গে থাকে জয়। তারা 'লিভ ইন' সম্পর্কে রয়েছে। একে অপরের পুরোনো বন্ধুও তারা। জয় স্বপ্ন দেখে সিনেমার পরিচালক হওয়ার। বেঙ্গালুরুর বহুজাতিক সংস্থার লোভনীয় চাকরি ছেড়ে সে কলকাতায় ফিরে আসে ছবি তৈরি করবে বলে। চিত্রনাট্য লিখে সে প্রযোজক খুঁজতে থাকে। জয় খানিক চুপচাপ। বিক্রমের সঙ্গে পুনমের অন্তরঙ্গতার বিষয়টাও জয় জানে। সে মনে মনে কষ্ট পায়, কিন্তু কখনও পুনমের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করে না। 


অন্যদিকে বিক্রমের মেয়ে সিমি। সে সিনেমায় অভিনয় করতে চায়। যদিও সিমির এই ইচ্ছেতে বিক্রমের একদম সায় নেই। সিমি ছোটবেলায় তার মাকে হারিয়েছে। বিক্রম তাকে সময় দেয় না। এই অবহেলা ও একাকীত্ব সিমিকে করে তুলেছে জেদি ও একরোখা। এক সময় ঘটনাচক্রে বিক্রমের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে টাকা রোজগারের তাগিদে সিমি একটা হাই প্রোফাইল এস্‌কর্ট এজেন্সিতে যোগ দেয়। সে দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। সিমি টাকার বিনিময়ে অমিতের শয্যাসঙ্গী হয়। 


আরও পড়ুন: Ai Poth Jodi Na Sesh Hoy: সাত্যকিকে বাঁচাতে রিনির বিরুদ্ধে কী পরিকল্পনা করবে ঊর্মি?


অমিত কলকাতা শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ও খ্যাতনামা ডাক্তার। একমাত্র সন্তানের অকালমৃত্যু স্ত্রী বিনিতার সঙ্গে দশ বছরের দাম্পত্যে শীতলতা নিয়ে এসেছে বহু বছর। এক ছাদের তলায় প্রায় অচেনা দুজন মানুষের মতো তারা বসবাস করে। শারীরিক চাহিদা মেটাতে অমিত প্রায়ই নিজের একটা ফাঁকা ফ্ল্যাটে ডেকে নেয় সিমিকে। তার ব্যক্তিত্বের টানে সিমি অমিতের প্রেমে পড়ে। যদিও অমিত তাকে আমল দেয় না। তার কাছে সিমি শুধুমাত্র শয্যাসঙ্গী। অমিত সিমিকে আশ্বাস দেয় যে তার পরিচিত এক প্রযোজকের কাছে সে সিমির জন্য সুপারিশ করবে। 


অন্যদিকে বিনিতা অর্থাৎ অমিতের স্ত্রী একজন গৃহবধূ। একমাত্র সন্তানের মৃত্যু স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতার দুর্ভেদ্য দেওয়াল গড়ে তুলেছে। শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রচণ্ড একাকীত্বে ভোগে বিনিতা। একদিন ঘটনাচক্রে তার সঙ্গে আলাপ হয় জয়ের। প্রথমে আলাপ, তারপর বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে কখন যেন দুটো একা মানুষ পরস্পরকে ভালবেসে ফেলে। এর পরেই ঘটে যায় কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সাংঘাতিক ভাবে বদলে যায় কয়েকটি জীবন। কীভাবে সেই ঘটনা গুলি পারস্পরিক সম্পর্কে ঘুণ ধরিয়ে এক একটি চরিত্রের সঙ্গে ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে সেটা দেখতে চোখ রাখতে হবে ক্লিকে। 


ছবিতে জয়ের চরিত্রে সৌরভ দাস, অমিতের চরিত্রে সমদর্শী দত্ত, সিমির চরিত্রে অনুষা বিশ্বনাথন, বিক্রমের চরিত্রে ডাঃ কৌশিক ঘোষ, পুনমের চরিত্রে পৌলমী দাস, বিনিতার চরিত্রে সুচিস্মিতা ঠাকুরকে অভিনয় করতে দেখা যাবে। অতিথি শিল্পী হিসেবে অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকায় থাকবেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্য়ায়। ছবিতে বেশ কিছু গান রয়েছে রূপঙ্কর বাগচী, ইমন চক্রবর্তী, শুভশ্রী দেবনাথ, সুজয় ভৌমিক, অরিন্দম কর ও অনামিকা নাথের কণ্ঠে।