নয়াদিল্লি: ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়া থেকে দলে কাটছাঁট, গত কয়েক বছরে লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করে সকলকে চমকে দিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। রাজ্যের ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৭টিতেই জয়ী হয়েছে তাঁর দল। ৩৩টি আসন পেয়েছে বিজেপি। এই সাফল্যের জন্য অখিলেশের প্রার্থীচয়নকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রার্থীচয়নের ক্ষেত্রে বিজেপি এবং কংগ্রেসও এবার নজর কেড়েছে উত্তরপ্রদেশে। (Uttar Pradesh Loksabha Elections Result)


রাজনীতি করতে গেলে থানা-পুলিশ, কোর্ট-কাছারি এবং সর্বোপরি জেলখাটা বাধ্যতামূলক ভাবে রসিকতা চালু রয়েছে ভারতীয় সমাজে। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে নতুনদের সুযোগ দিতে দেখা গিয়েছে মোটামুটি সব রাজনৈতিক দলকেই। সমাজবাদী পার্টি, বিজেপি, কংগ্রেসের তরফে এমন বেশ কয়েকজনকে প্রার্থী করা হয়, যাঁরা উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে ফিরেছেন, কেউ জলের মতো ইংরেজি বলতে পারেন যেমন, তেমনই মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন প্রচারে। শিক্ষিত, যুবসমাজের ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে উদারপন্থী ভাবনার অধিকারী তাঁরা। (Lok Sabha Elections 2024 Result)




এক্ষেত্রে প্রথমেই ২৫ বছর বয়সি পুষ্পেন্দ্র সরোজের নাম উঠে আসছে। নির্বাচনী জয়ী হয়ে ইতিমধ্যেই দেশের অন্যতম কনিষ্ঠ সাংসদের তকমা জুড়ে গিয়েছে নামের পাশে। লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাকাউন্টিং এবং ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রি রয়েছে পুষ্পেন্দ্রর। অখিলেশ কৌশম্বীতে প্রার্থী করেন তাঁকে। ১ লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন পুষ্পেন্দ্র। বিজেপি-র দু'বারের সাংসদ বিনোদ সোনকারকে পরাজিত করেছেন।


পুষ্পেন্দ্রর বাবা ইন্দ্রজিৎ সরোজ উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক। জয়ের পর পুষ্পেন্দ্র বলেন, "নিজের কেন্দ্রের উন্নয়নই আমার লক্ষ্য। স্থানীয় আকচাআকচিতে না জড়িয়ে সেদিকেই মনোনিবেশ করতে চাই আমি।"




একই ভাবে ২৭ বছর বয়সি ইকরা হাসান এবারের নির্বাচনে নজর কেড়েছেন। কৈরানা আসন থেকে ৬৯ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন ইকরা।  ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ থেকে আন্তর্জাতিক আইনে ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "নিজের কেন্দ্রের কাজকর্মই প্রাধান্য পাবে আমার কাছে। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য কাজ করতে চাই, যাঁরা এখনও পিছিয়ে রয়েছেন, শিক্ষার ন্যূনতম সুযোগও পান না।"




২৫ বছর বয়সি পিয়া সরোজকে এবার মছলিশহরে প্রার্থী করে সমাজবাদী পার্টি। পিয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। প্রায় ৩৬ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। পিয়ার বাবা তুফানি সরোজ প্রাক্তন সাংসদ। 




বাহরাইচে এবার আনন্দ গোন্ডকে প্রার্থী করে বিজেপি। আনন্দ MBA করেছেন। PH.D-ও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। বিদায়ী সাংসদ অক্ষবর লাল গোন্ডের ছেলে আনন্দ। ৬৪ হাজার ২২৭ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি।




কংগ্রেসের টিকিটে এলাহাবাদ থেকে জয়ী হয়েছেন ঊজ্জ্বল রমন সিংহ। সেন্ট স্টিফেন্স অ্যান্ড দিল্লি ইউনিভার্সিটি ল স্কুল থেকে আইনের ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। ৫৮ হাজার ৭৯৫ ভোটে জয়ী হয়েছেন ঊজ্জ্বল। 




শশাঙ্ক মণি ত্রিপাঠীকে এবার প্রার্থী করে বিজেপি দেওরিয়া আসনে। IIT দিল্লি থেকে বিটেক করেছেন শশাঙ্ক। সুইৎজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে ক্যাম্পাস রয়েছে যে IMD Lausanne-এর, সেখান থেকে MBA করেন। ৩৪ হাজার ৮৪২ ভোটে জয়ী হয়েছেন শশাঙ্ক।




রাজস্থানের ভরতপুর আসনে সঞ্জনা জাটবকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। ২৬ বছর বয়সি সঞ্জনা বিজেপি-র রামস্বরূপ কোলীকে প্রায় ৫২ হাজার ভোটে পরাজিত করেছেন। এর আগে, ২০২৩ সালে রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন সঞ্জনা। দলিত সমাজের প্রতিনিধি তিনি। মহারাজা সুরজমল ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি অরজন করেন সঞ্জনা। তিনিও কমবয়সি সাংসদ হিসেবে লোকসভায় প্রবেশ করছেন।


আরও পড়ুন: Share Market Manipulation Allegations: মোদি-শাহের বার্তা, সন্দেহজনক লেনদেন, বাজারের ধসে কাদের লাভ? ক্রোনোলজি বোঝালেন রাহুল