কলকাতা: প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিক। শনিবার শেষ নিঃশ্বাল ত্যাগ করেন তিনি। কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অভিনেত্রী। শুক্রবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় তাঁকে। এদিন সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। (Anjana Bhowmick) হাসপাতালে রয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।


পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর,  দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। শ্বাসকষ্ট নিয়ে শুক্রবার রাতেই তিনি ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। বড় মেয়ে নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত এবং জামাই জিশু সেনগুপ্ত এই মুহূর্তে হাসপাতালেই রয়েছেন। অঞ্জনা ভৌমিকের মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই শোকস্তব্ধ টলিউড। উত্তম কুমারের সঙ্গে তাঁর অভিনীত 'চৌরঙ্গী' এবং 'নায়িকা সংবাদ' বাঙালির মনে আজও রয়ে গিয়েছে। (Anjana Bhowmick Demise)


কোচবিহারে জন্ম প্রয়াত নায়িকার। আসল নাম আরতি, ডাকনাম বাবলি। কোচবিহারেই কাটে স্কুলজীবন। এর পর সরজিনি নায়ডু কলেজে পড়াশানো। নৌবাহিনীর আধিকারিক অনিল শর্মার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। মুম্বইয়ে সংসার পাতেন তাঁরা। তাঁদের দুই কন্যা, নীলাঞ্জনা এবং চন্দনা শর্মা। মাকে অনুসরণ করে দুই মেয়েও অভিনয়ে পা রাখেন। এখন যদিও অভিনয়ক্ষেত্রে তেমন সক্রিয় নন তাঁরা। সংসার নিয়ে ব্যস্ত তাঁরা। নীলাঞ্জনা যদিও নিজেদের প্রযোজনা সংস্থার দায়িত্বে রয়েছেন।


আরও পড়ুন: Kavita Chaudhary: হৃদরোগে প্রয়াত 'উড়ান' ধারাবাহিক খ্যাত অভিনেত্রী কবিতা চৌধুরী


১৯৬৪ সালে, মাত্র ২০ বছর বয়সে অভিনয় জগতে পা রাখেন নায়িকা। পীযূস বসুর পরিচালনায় অভিনয় করেন 'অনুষ্টুপ ছন্দ' ছবিতে। সেই ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই নিজের নাম আরতি থেকে পাল্টে অঞ্জনা করে নেন। প্রথম ছবিতেই নজর কাড়ে অভিনয়। বছরের সেরা ছবি হিসেবে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে 'সার্টিফিকেট অফ মেরিটও' পায় ছবিটি।


এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি নায়িকাকে। উত্তম কুমারের সঙ্গে তাঁর জুটি মনে ধরেছিল দর্শকদের। তাই 'চৌরঙ্গি', 'কখনও মেঘ', 'নায়িকা সংবাদ', 'রৌদ্র ছায়া', 'রাজদ্রোহী'র মতো একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন জুটিতে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনীত 'মহাশ্বেতা'ও প্রশংসা কুড়োয়। কিন্তু উত্তম কুমারের নায়িকা তকমা সেঁটে যায় নামের পাশে।  সেই নিয়ে সমালোচনাও শুনতে হয়। তবে একটা সময় পর নায়িকা নিজেই অভিনয় জগৎ থেকে সরে যান। তবে বাঙালির হৃদয়ে আজও রয়ে গিয়েছেন তিনি।