Fact Check: ভারতীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু সমাজমাধ্যম, বিশেষত পাকিস্তানের মূলধারার সংবাদমাধ্যম একযোগে নিরন্তর ভুয়ো বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে চলেছে। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ভারতীয়দের (Fact Check) মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো এই মানসিক আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। তারপরেও ভারতীয় নাগরিক ও সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ভুল তথ্যের (PIB Fact Check) শিকার হচ্ছেন। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সোচ্চারে সমস্ত ধরনের ভুয়ো তথ্য, মিথ্যা প্রচার ও বিভ্রান্তিকর পোস্টের বিরোধিতা করছে এবং সঠিক তথ্য ভারতীয় নাগরিকের সামনে নিয়ে আসছে। বিগত ৮ মে রাত ১০টা থেকে ৯ মে ২০২৫ সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে পিআইবি ফ্যাক্ট চেক এরকম ৭টি ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেছে।
১) একটি ভিডিয়ো তুমুল ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে জলন্ধরে পাকিস্তানের ড্রোন অ্যাটাকের কথা বলা হচ্ছে। ভারতীয়দের মনে ভয় ধরিয়েছে এই ভিডিয়ো। পিআইবি এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করে দেখেছে যে এটি আদপে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কহীন, নিছক একটি 'ফার্ম ফায়ার' ভিডিয়ো। ভিডিয়োতে সময় উল্লেখ রয়েছে রাত ৭টা ৩৯ মিনিট, আর আদপে ড্রোন হামলা হয়েছিল আরও পরে।
মূল ভিডিয়ো দেখুন এখানে
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক সিদ্ধান্ত দেখুন
২) ভারতেই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে পাকিস্তানি সেনারা ভারতের একটি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এই ভিডিয়ো শেয়ার করা হয়েছে বেশ কিছু আনভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে। পিআইবি এই ভিডিয়োটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়ো বলে দাবি করেছে এবং জানিয়েছে যে ভারতীয় সেনায় '২০ রাজ ব্যাটেলিয়ন' নামের এমন কোনও ঘাঁটি বা ইউনিট নেই। এই ভিডিয়োটি ভারতীয়দের আতঙ্কিত করার উদ্দেশ্যেই প্রচারিত এবং মিথ্যা প্রচার করার জন্য বানানো হয়েছে বলেই জানিয়েছে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো।
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক সিদ্ধান্ত দেখুন
৩) আরেকটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এর মধ্যে যেখানে দাবি করা হচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতের উপরে প্রতিশোধ নিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। পিআইবি এই ভিডিয়োটিকেও ভুয়ো বলে চিহ্নিত করেছে। পিআইবি জানিয়েছে যে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়েছে তা আদপে বেইরুট, লেবাননে ২০২০ সালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফুটেজ।
মূল ভিডিয়ো দেখুন এখানে
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক সিদ্ধান্ত
৪) জম্মুও কাশ্মীরের রাজৌরিতে একটি ভারতীয় সেনার ঘাঁটির উপরে ফিদায়িন হামলার তথ্য বহুলভাবে প্রচার করা হচ্ছিল। সত্যতা যাচাই করার মাধ্যমে পিআইবি জানিয়েছে যে এমন কোনও আত্মঘাতী হামলা ঘটেনি ভারতীয় সেনার কোনও ইউনিটেই। এই ভিডিয়োর মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ভিডিয়োটিকেও ভুয়ো বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
৫) একটি গোপন চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ভি.কে নারায়ণ নর্দার্ন কমান্ডের সেনা কর্মকর্তার কাছে সামরিক প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি গোপন চিঠি পাঠিয়েছিলেন। পিআইবি এই চিঠির ব্যাপারেও তদন্ত করেছে এবং অনুসন্ধানে দেখেছে যে জেনারেল ভি.কে. নারায়ণ আদপে সেনাপ্রধান নন, ফলে এই তথ্যও সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক সিদ্ধান্ত
৬) আবার একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে ভারতীয় সেনা নাকি আম্বালা বিমানঘাঁটিকে হাতিয়ার করে অমৃতসর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারতীয় নাগরিকদের উপরেই হামলা চালিয়েছে। পিআইবি ফ্যাক্ট চেক দেখেছে যে এই ভিডিয়োটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই প্রচার করা হয়েছে। পিআইবি এই মর্মে একটি বিস্তারিত ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতি তুলে ধরেছে এবং আসল ছবিটি সম্পর্কে অবহিত করেছে।
মূল ভিডিয়ো দেখুন এখানে
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক সিদ্ধান্ত
৭) আবার আরেকটি সমাজমাধ্যমের ভিডিয়ো পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে ভারতের সমস্ত বিমানবন্দরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এই ভিডিয়োর দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে পিআইবি এবং এটিকে ভুয়ো বলে চিহ্নিত করে জানিয়েছে যে এমন কোনও সিদ্ধান্ত সরকারের তরফে নেওয়া হয়নি।
পিআইবির ফ্যাক্ট চেক সিদ্ধান্ত
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো ভুয়ো খবর মিথ্যা প্রমাণ করা এবং দেশের স্বার্থে দেশের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে।