সালটা ২০২০। অভিশপ্ত ১৪ জুন। বলিউডে একের পর এক হিট ছবি, একাধিক প্রতিভার অধিকারী হওয়া সত্বেও অকালে চলে গিয়েছিল একটা তরতাজা প্রাণ। যে কোনও কারণেই হোক, শেষ-মেষ আত্মহত্যার পথই বেছে নিয়েছিলেন অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুত। কী-কেন-কীভাবে ইত্যাদি একাধিক প্রশ্ন থাকলেও সেসব উত্তর এখনও অধরাই। অবসাদ নাকি অন্য কোনও কারণে এই ভয়াবহ সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। আত্মহত্যার এই তালিকাটা নেহাত ছোট নয়। বিভিন্ন সময়ে খবরের শিরনামে উঠে এসেছে একাধিক নাম। তবে আত্মহত্যার একমাত্র কারণ কি অবসাদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভ্রান্তি রয়েছে সাধারণের এই ভাবনায়।


মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলছেন, অবসাদই আত্মহত্যার একমাত্র কারণ এটি অতিসরলিকরণের ভাবনা হতেও পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা জানতেই পারি না, কেন একটা মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নিলেন, যদি না তিনি তা বিস্তারিতভাবে কোথাও লিখে রেখে দেন। আত্মহত্যার ঠিক আগের মুহূর্তে ব্যক্তির মানসিক পরিস্থিতি ঠিক কী ছিল তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানা সম্ভব নয়। অনুমানের ভিত্তিতে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে কয়েকটা পয়েন্ট দর্শানো চেষ্টা করি। কিন্তু অবসাদই যে আত্মহত্যার একমাত্র কারণ একথা হলফ করে বলা যায় না।


তিনি আরও জানাচ্ছেন, আত্মহত্যার তাগিদ যে কোনও পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেও আসতে পারে। সব ক্ষেত্রে ব্যক্তির দীর্ঘ অবসাদের ইতিহাস থাকবেই এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। দীর্ঘ অবসাদে ভুগতে থাকা রোগীরাও শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ নাও নিতে পারে। বহু রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, হয়ত অবসাদ এতটাই তীব্র যে, আত্মহননের শক্তিটুকুও তাঁর আর নেই, শুধু ইচ্ছেটুকু রয়ে গিয়েছে। 


এই প্রেক্ষাপটে তাৎক্ষণিক সুইসাইডাল ইমপালসের ভূমিকাকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যে বা যাঁরা আত্মহত্যা করছেন সে হঠাৎই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কাজেই সাধারণের ভাবনাগুলোর মধ্যে অসংখ্য ভ্রান্তি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধু তাই নয়, একটা মানুষের বাহ্যিক উপস্থাপনা, গতিবিধি কিন্তু তাঁর সার্বিক অবস্থার মাপকাঠি নয় বলেও মনে করেছেন অনুত্তমা।