স্ট্রোক, এমন একটি ঘটনা, যা জীবনটাকেই বদলে দিতে পারে। সরাসরি আঘাত হানে মস্তিষ্কের উপর। পক্ষাঘাতে পঙ্গু করে দিতে পারে শরীর। ভাবনা-চিন্তার ক্ষমতাও হতে পারে নিয়ন্ত্রিত। বন্ধ হতে পারে কথাবার্তাও। হঠাৎ করেই আসা একটা ধাক্কা বদলে দিতে পারে জীবনের গতি। কিন্তু স্ট্রোক কি আটকানো যায় না ? আগে থেকে সতর্ক হওয়া যায় না? নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায়,উঠে এসেছে একটি নতুন তথ্য। রক্তের গ্রুপ এবং প্রাথমিক স্ট্রোকের ঝুঁকির মধ্যে একটি সম্পর্ক চিহ্নিত করা হয়েছে সেই গবেষণায়।
গবেষকরা প্রায় ১৭,০০০ স্ট্রোক রোগীকে স্যাম্পল হিসেবে নিয়েছেন। এদের বয়স ১৮ থেকে ৫৯-এর মধ্যে। এছাড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল স্ট্রোক হয়নি এমন ৬ লাখ মানুষকে। সবার তথ্য পরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যায়, A, সাবটাইপ A1 রক্তের গ্রুপের লোকেদের ৬০ বছর বয়সের আগে অন্যান্য রক্তের গ্রুপের তুলনায় স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৬% বেশি । এই তথ্য ডাক্তারদের কাজে লাগতে পারে। তাঁরা রক্তের গ্রুপ দেখে রোগীদের ঝুঁকি বুঝতে পারবেন।
এই গবেষণায় স্ট্রোকের সঙ্গে সম্পর্কিত জেনেটিক কারণগুলি খুঁজে বের করারও চেষ্টা করা হয়।বিজ্ঞানীরা দুটি মূল genetic regions চিহ্নিত করেন, যার মধ্যে একটি রক্তের গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত। গভীর গবেষণার পর দেখা যায়, রক্তের গ্রুপ A1 subgroup-এর প্রাথমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি 16%বেশি। যদিও কেন বেশি, তা এখনও সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায়নি। তবে হতে পারে একেকরকম রক্তে গ্রুপে রক্ততঞ্চনের বিষয়টি আলাদাআাদা। এছাড়াও অন্যান্য কারণ থাকতে পারে। এই গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক, মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ মেডিসিনের নিউরোলজির অধ্যাপক, এমপিএইচ-এর এমডি, ডাঃ স্টিভেন জে কিটনার বলেন, কম বয়সে স্ট্রোকে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এদের এই প্রাণঘাতী ধাক্কায় মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। যাঁরা বেঁচে যান, তাঁরা বহু বছরই অক্ষমতা নিয়ে বেঁচে থাকেন। তা সত্ত্বেও, কম বয়সে স্ট্রোকের কারণ নিয়ে খুব কম গবেষণা হয়েছে।
গবেষকরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে রক্তের গ্রুপ বা স্ট্রোকের পারিবারিক ইতিহাসের মতো জেনেটিক ঝুঁকির কারণগুলি জানা জরুরি। A1 রক্তের গ্রুপের মানুষদের আগে থেকে সচেতন করা গুরুত্বপূর্ণ। রক্তের গ্রুপ এ স্ট্রোকের এই সম্পর্ক সংক্রান্ত এই গবেষণা ভবিষ্যতে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে চিকিৎসকদের সাহায্য করতে পারে, মনে করছেন গবেষকরা।