কলকাতা: ডিম (Egg) বিশ্বব্যাপী অন্যতম জনপ্রিয় প্রধান খাবার (Food)। পুষ্টির প্রসঙ্গ এলে ডিম একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ, কারণ এতে সমস্ত পুষ্টি থাকে। একটি ডিমে প্রায় ৭২ ক্যালোরি, ৬ গ্রাম প্রোটিন এবং ৫ গ্রাম স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে, যার মধ্যে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে।
ডিম উচ্চ-মানের প্রোটিনে সমৃদ্ধ, এটি পেশী মেরামত এবং বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। ডিম একটি সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্য। ডিমের রেসিপি তৈরির হিসেবে দুটি খাবার রয়েছে যা সারা বিশ্বে জনপ্রিয় - সেদ্ধ ডিম এবং অমলেট। কিন্তু আপনি কি জানেন এর মধ্যে কোনটি বেশি পুষ্টিকর? চলুন জেনে নেওয়া যাক- ডিমে ভিটামিন ডি, বি ১২ এবং রিবোফ্লাভিন রয়েছে, যা শক্তি উৎপাদন এবং সামগ্রিক জীবনীশক্তির জন্য প্রয়োজনীয়। এটি কোলিন সমৃদ্ধ যা মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে এবং বিকাশে কাজ করে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়।
ডিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের স্বাস্থ্যের উপকার করে, বয়স সঙ্গে সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয়ের ঝুঁকি কমায়। ডিমে স্বাস্থ্যকর আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
সেদ্ধ ডিম একটি সহজ এবং পুষ্টিকর খাবার। একটি বড় সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৭৮ ক্যালোরি থাকে, যা প্রোটিন, চর্বি, প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজের ভারসাম্য রাখে। সেদ্ধ করলে তা ডিমের বেশিরভাগ পুষ্টি সংরক্ষণ করে, এটি দ্রুত তৈরি করা যায় এবং স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে উপযোগী। ডিম উচ্চ মানের প্রোটিন সমৃদ্ধ, যাতে শরীরের সর্বোত্তম বৃদ্ধি এবং মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এটি ভিটামিন বি ১২, ডি এবং রিবোফ্লাভিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। তাই ডিম খেলে শক্তি উৎপাদন হয় এবং হাড়ের স্বাস্থ্য থাকে। সেদ্ধ ডিমে কোলিন থাকে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান।
অমলেট সুস্বাদু একটি খাবার। এটি নানা ধরনের শাক-সবজি, পনির, মাংস ইত্যাদি যোগ করেও তৈরি করা যায়। অমলেটের পুষ্টির মান এর উপাদানগুলোর ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। অমলেটে যোগ করা উপাদানগুলোর কারণে প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, সেইসঙ্গে ক্যালোরি এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বিও বেশি হতে পারে, বিশেষ করে যদি অতিরিক্ত তেল বা মাখন দিয়ে রান্না করা হয়। তবে অমলেটে শাক-সবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন থেকে বিভিন্ন পুষ্টি যোগ করা যায়, যা খাবারের সামগ্রিক পুষ্টির মান বাড়ায়।
সেদ্ধ ডিম অতিরিক্ত চর্বি বা উপাদান ছাড়াই রান্না করা হয় বলে এর বেশিরভাগ প্রাকৃতিক উপকারিতা ধরে রাখে। ফুটন্ত প্রক্রিয়া ডিমের প্রোটিন এবং পুষ্টি সংরক্ষণ করে। অন্যদিকে, অমলেটে প্রোটিন এবং যোগ করা উপাদানগুলো থেকে অতিরিক্ত পুষ্টি যোগ হতে পারে, তবে রান্নার তেল এবং অন্যান্য উচ্চ-ক্যালোরির কারণে ক্যালোরি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটও বেশি হতে পারে।
কোনটি খাবেন?
সেদ্ধ ডিম প্রাকৃতিক পুষ্টি ধরে রাখে। কিন্তু অমলেটের উপকারিতা নির্ভর করে আপনি এটি কীভাবে তৈরি করছেন তার ওপর। যদি বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান যোগ করে অমলেট তৈরি করেন তবে আরও বেশি স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু যদি অস্বাস্থ্যকর উপায়ে তৈরি করেন তখন উপকারের বদলে অপকারই বেশি হতে পারে। তবে পুষ্টিকর অমলেট বা সেদ্ধ ডিম, যেভাবেই খান না কেন, এটি আপনাকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুবিধা দেবে। আপনি যেভাবে পছন্দ করেন, সেভাবেই খান। তবে তৈরি করার পদ্ধতি যেন স্বাস্থ্যকর হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
তথ্যসূত্র- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ