অ্যামিবিক মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস | বহু মানুষের আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে এই অসুখ। দক্ষিণের কেরল থেকে আতঙ্কের রেশ এখন এই বঙ্গেও। এই অসুখের সবথেকে ভয়ানক দিক হল এর কোনও চিকিৎসা নেই। বিষয়টি নিয়ে এবিপি লাইভকে বিস্তারিত বোঝালেন বিশিষ্ট নিউরোলজিস্ট ড. যশোধরা চৌধুরী।
অ্যামিবিক মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস এক ধরনের প্রোটোজোয়া সৃষ্ট অসুখ। যার উৎস মূলত জল। দেখা গিয়েছে পুকুরের জল, পুলের জল নাকে ঢুকেই পৌঁছচ্ছে সোজা মস্তিষ্কে। আর তারপরই শুরু হচ্ছে তার ভয়ংকর প্রভাব।
নাক দিয়ে ওই জলের সঙ্গে শরীরে ঢোকার পর প্রোটোজোয়ান নেগেলেরিয়া ফাউলেরি সংক্রমণ ছড়ায়। প্রথমে জ্বর, মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা, আলো সহ্য করতে না পারা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এর উপসর্গ।।
নাক দিয়ে ঢুকে পাকস্থলীতে যাওয়ার কথা থাকলেও সে নাকের মধ্যে দিয়ে অল ফ্যাক্টরি নার্ভ বা গন্ধ শোঁকার নার্ভ মারফত সোজা পৌঁছে যায় মাথার মধ্যে। দিন কয়েকের মধ্যেই কুরে কুরে খেতে শুরু করে মস্তিষ্কের অন্দর। ধ্বংস করে দেয় স্নায়ুতন্ত্রকে। চলতি বছরেই কেরলে 'ব্রেন ইটিং অ্যামিবার' আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে একাধিক শিশু সহ ১৯ জনের!
মনে রাখতে হবে -
এই অসুখ ছড়ায় পুল, পুকুরের ফ্রেশ ওয়াটার থেকে।
বেড়াতে গিয়ে পুলে স্নান করেন অনেকেই। বিভিন্ন রিসোর্টে পুলে স্নানের বন্দোবস্ত আছে। সেই জলে ক্লোরিন ব্যবহার করে সংক্রমণ মুক্ত করা হয় কিনা খোঁজ নিন।
সমুদ্র স্নানে এই রোগ ছড়ায় না। নঝনা জল এক্ষেত্রে নিরাপদ।
যাঁরা নাক দিয়ে জল টেনে নাক পরিষ্কার করেন, তাঁরা সতর্ক থাকুন। আপনার বাড়ির জলের উৎস নিয়ে সতর্ক থাকুন
আমেরিকান সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে সাঁতার কাটার সময় বা জলে ডুব দেওয়ার সময় এক ধরনের নোজক্লিপ ব্যবহার করা যায় তাতে নাক দিয়ে জল প্রবেশ করে কোন সংক্রমণ মস্তিষ্কে যাওয়া থেকে আটকানো যায়।
সামনে উৎসবে মরশুম অনেকে বেড়াতে যাবেন। তাই কোন জলাশয় স্নানের আগে বারবার সতর্ক হোন। কারণ এ ধরনের রোগ জল থেকে ছড়ায়।
আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে, এই অসুখের চিকিৎসা খুব জটিল নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রমাণিত নয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে কয়েকটি ওষুধের উল্লেখ রয়েছে। যা নাকি এই ধরনের সংক্রমণে কাজ করে । তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সংক্রমণ মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই প্রিভেনশন ইজ অলওয়েজ বেটার দেন কিওর। সতর্ক থাকুন। সুস্থ থাকুন।