ক্যান্সারের চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত। অনেক ক্ষেত্রেই ক্যান্সার মুক্ত হয়ে হাসি মুখে বাড়িও যাচ্ছেন রোগীরা। তাবলে ক্যান্সার হওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না।সেই সঙ্গে কমছে না কর্কট রোগের আতঙ্কও। ২০২২ সালের হিসেব বলছে, শুধু সেই বছরই ২৩ লক্ষ জনের স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে। মারা যান ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। এখন প্রশ্ন, কেন হয় ব্রেস্ট ক্যান্সার, কেন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তর দেওয়া সহজ নয়। জিনগত, হরমোন গত, প্রাকৃতিক কিছু কারণেও এই কঠিন অসুখের প্রবণতা বাড়ছে। BRCA1 and BRCA2 gene অনেকাংশেই দায়ী। এছাড়াও কিছু জীবনযাত্রাগত কারণও প্রভাব বিস্তার করছে। মদ্যপান, ধূমপান, রেডিয়েশনও বাড়াচ্ছে ঝুঁকি।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, একটি বড় গবেষণায় এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। লক্ষ লক্ষ মহিলার কাছে এই গবেষণার ফল একটা ওয়ার্নিং বেল! একটি খুব সাধারণ ওষুধ, যা অনেক মহিলাই ব্যবহার করে থাকেন, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। JAMA Oncology র একটি রিসার্চে দাবি, কিছু হরমোনাল কনট্রাসেপটিভ বা গর্ভনিরোধক, বিশেষত যেগুলি progestin-only contraceptive, বাড়িয়ে দেয় স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি (breast cancer risk )
এই ওষুধ নিয়ে কখনওই মেয়েদের মনে কোনও সংশয় ছিল না। এই ধরনের ওষুধকে নিরাপদ বলেই মনে করতেন অনেকে, এমনকী চিকিৎসকরাও। তবে এই গবেষণার পর ডাক্তাররাও মনে করছেন, ওভার - দ্য -কাউন্টার এ ধরনের কন্ট্রাসেপ্টিভ নেওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার।
সুইডেনে ১৩ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ২০ লক্ষেরও বেশি মহিলার উপর একটি বড় জনসংখ্যা-ভিত্তিক সমীক্ষা করা হয়। এই ধরনের হরমোনাল গর্ভনিরোধক ব্যবহার করলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে কোনও হরমোনাল গর্ভনিরোধক ব্যবহারের জন্য ঝুঁকির অনুপাত (এইচআর) অনেকটাই বেড়ে যায়। যাঁরা কখনও এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেননি তাদের ঝুঁকি আপেক্ষিকভাবে ২৪% বেড়ে যায়।
প্রথমত, গর্ভনিরোধক, মাসিক নিয়ন্ত্রণে, ব্রণর চিকিৎসা, এন্ডোমেট্রিওসিস এবং অন্যান্য কারণে বিশ্বব্যাপী হরমোনাল গর্ভনিরোধক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এখন, উপরে উল্লিখিত গবেষণাটি এই সব ওষুধের একটি সূক্ষ্ম ঝুঁকি দেখিয়েছে। তবে এত মহিলা এই ওষুধগুলি ব্যবহার করেন, তাই এর প্রভাব তুচ্ছ বলে উড়িয়ে দেওয়াও যায় না। তাই এই ধরনের ওষুধ দেওয়ার আগে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
তবে মনে রাখা দরকার যে গবেষণাটি পর্যবেক্ষণমূলক। এই ওষুধের ব্যবহার যথেষ্ট পরিমাণে হয়। এর বেশ কিছু সুবিধের দিকও আছে। এবার কোন বয়সের মহিলা এই ওষুধ খাচ্ছেন, তার পরিবারে স্তন ক্যান্সারের কোনও ইতিহাস আছে কি না, জেনেটিক প্রবণতা - এগুলোও দেখে নিতে হবে। এই গবেষণা থেকেই একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ঠিক নয়। কারণ আরও গভীর গবেষণা দরকার। ক্লিনিক্যাল স্টাডি দরকার।