কলকাতা: বেশ বড় ভুঁড়ি হয়ে গিয়েছে। ভুঁড়িই চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। এ কি আদৌ কমানো সম্ভব ? এই নিয়েই এবিপি লাইভের সঙ্গে বিশদে কথা বললেন ফর্টিস হাসপাতালের গ্যাসট্রোএনটেরোলজি বিভাগের রোবোটিক ও জেনারেল সার্জেন চিকিৎসক উদীপ্ত রায়। 


ভুঁড়ি সত্যিই কমে ?


চিকিৎসকের কথায়, ভুঁড়ি কমে না, এই ধারণা ভুল। ভুঁড়ি কমে তবে কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। আমাদের শরীরের ওজন স্বাস্থ্যকর কি না, তা বোঝার একটি উপায় রয়েছে। তার নাম বিএমআই অর্থাৎ বডি মাস ইনডেক্স। উচ্চতা ও ওজন দিয়ে এটি হিসেব করতে হয় (আপনার বিএমআই হিসেব করুন এই লিঙ্কে গিয়ে)। এই মাপ ২৫ থাকলে তা একদম স্বাস্থ্যকর। এর থেকে কম হলে ওজন কম, এর বেশি হলে ওজন বেশি। বেশি ওজনেরও কিছু ভাগ রয়েছে।


চিকিৎসক উদীপ্তর কথায়, ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ক্লাস ওয়ান ওবেসিটি বলা হয়।


৩০ থেকে ৩৫-এর মধ্যে থাকলে তাকে ক্লাস টু ওবেসিটি বলা হয়।


৩৫ থেকে ৪০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ক্লাস থ্রি ওবেসিটি বলা হয়।


অনেকের এর থেকেও বেশি ওজন হতে পারে। বিএমআই মাপ ছাড়িয়ে যেতে পারে  ৫০-ও।


কীভাবে ভুঁড়ি কমানো যায় ?


চিকিৎসকের কথায়, ভুঁড়ি কোন অবস্থায় রয়েছে তা জানতে হবে। ৩৭.৫ বিএমআই হলে বেরিয়াট্রিক সার্জারি করানো ভাল। এছাড়াও, ৩২.৫ বিএমআই ও নানা শারীরিক সমস্যা (হাই ব্লাড প্রেশার, হাই ব্লাড সুগার, ইউরিক অ্যাসিড) থাকলেও বেরিয়াট্রিক সার্জারি করানো ভাল। কারণ দেখা গিয়েছে, এই ওজনে অনেকেই জীবনযাপনে বদল আনতে পারেন না। সেই মনোবল সবার থাকে না। ফলে রোগা হতে পারেন না। তবে মনোবল থাকলে ক্লাস টু ওবেসিটিতেও জীবনযাপনের বদল আনা যায়। ব্যায়াম করলে কাজ দেয়।  তার বেশি হলে অস্ত্রোপচার ছাড়া ওজন কমানো কঠিন। তবে বেরিয়াট্রিক সার্জারিই শেষ সমাধান নয়। এর পর নিজেকেও কিছু কিছু নিয়মের মধ্য়ে থাকতে হয়।  


অস্ত্রোপচার ছাড়া আর কী উপায় ?


উপায় আছে, কিন্তু তার সঙ্গে চাই মনোবল। এমনটাই বললেন চিকিৎসক উদীপ্ত রায়। তাঁর কথায়, জীবনযাপনে কিছু বদল আনা চাই। আর সেই বদল ধরে রাখার মনোবলও চাই।


অল্প করে বার বার খাওয়া - অল্প অল্প করে বারবার খাবার খেতে হবে। খিদে বাঁচিয়ে রেখে খেতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা খাওয়ার জন্য বাঁচি না, বাঁচার জন্য খাই। খাওয়াদাওয়ার মধ্যে থেকে কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ ভাত, রুটি কমাতে হবে। মিষ্টি খাওয়া বাদ দিতে হবে। শাকসবজি, প্রোটিন, ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।


নিয়মিত ব্যায়াম -  ব্যায়াম করা শুরু করতে হবে। অনেকেই সকালে কাজের চাপে ব্য়ায়াম করতে পারেন না। তাঁরা রাতের দিকে হাঁটতে পারেন।


মানসিক স্বাস্থ্য - ওবেসিটি আর ডিপ্রেশন একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। বেশিরভাগ সময় একটা হলে আরেকটা আসে। তাই মন ভাল রাখতে হবে। এর জন্য স্ট্রেস কমাতে হবে। পাশাপাশি রোজ ভাল ঘুম চাই।


ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


আরও পড়ুন - Breast Cancer: একবার সেরে গেলেও আবার ক্যানসার ? ‘দায়ী’ প্রোটিনের মিলল খোঁজ