নয়াদিল্লি: শরীর সুস্থ রাখতে গেলে যে শুধু খাদ্যাভ্যাসেই জোর দিতে হবে, তাই নয়। শরীরকে সুস্থ রাখতে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমও খুবই জরুরি। যে দিকটায় ততটাও মনোযোগ দেন না বহু মানুষ। কাজের চাপে বিশেষ করে এখনকার পরিস্থিতিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কারণে বহু মানুষেরই ঘুমের উপর একটা প্রভাব পড়েছে। বেশিরভাগ মানুষই পর্যাপ্ত সময় ঘুমোন না। আর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে শরীরে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে যে, একটানা বেশ কিছুদিন যদি আপনার পর্যাপ্ত সময় অনুযায়ী না ঘুম না হয়, তার মারাত্মক প্রভাব পড়ছে শরীরে। শুধু শরীরেই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ছে।
সম্প্রতি অ্যানালস অফ বিহেভিয়ারাল মেডিসিনের একটি সমীক্ষায় এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে বলা হচ্ছে, মানুষের সারাদিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। যদি কোনও ব্যক্তি একটানা ৮ দিন ৬ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমোন, তাহলে তার প্রভাব পড়ছে শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেও। বিশেষজ্ঞরা এই প্রসঙ্গে জানাচ্ছেন, একাধিক গবেষণায় বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ৬ ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে বা বারবার ঘুমের মধ্যে জেগে যাওয়ার কারণে ধমনীতে এক ধরনের চর্বিজাতীয় প্রাচীর তৈরির আশঙ্কা সৃষ্টি করে। ধমনীতে প্রাচীর তৈরির ফলে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হলে তা স্ট্রোক, হজমে সমস্যা, স্থূলতা, ব্যাথা এমনকি হৃদরোগ পর্যন্ত হতে পারে। এর পাশাপাশি কম ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাঘাত ঘটায়।
গবেষণায় জানা যাচ্ছে, মস্তিষ্ককে সচল রাখতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারাদিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই জরুরি। আর যদি দীর্ঘদিন ৬ ঘণ্টার কম ঘুম হয়, তাহলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকে। মস্তিষ্ক যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম না পায়, তাহলে অবসাদ, বিষন্নতা, হ্যালুসিনেশন, স্মৃতি হ্রাসের মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এখানেই শেষ নয়, আপনার বিচার বিশ্লেষণের ক্ষমতাও ক্রমশ কমে যেতে থাকে কম ঘুমের ফলে। তাই আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে বজায় রাখতে কম ঘুমের হাত থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম আপনার মানসিক এবং শারীরিক দুই স্বাস্থ্যই বজায় রাখবে।