সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ডেল্টা, আলফা, বিটা, ওমিক্রনের ঢেউ-এর পর এবার KP ডট টু। নতুন ভ্য়ারিয়েন্টে আবার হাজির করোনা। নামকরণ করা হয়েছে ফ্লার্ট ! আপাতত এই ফ্লার্টের (FLiRT Variant) ঠেলায় বিপর্যস্ত মার্কিন মুলুক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দাপটে দেখাচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট। ২০১৯ - এর শেষাশেষি থেকে যে অতিমারি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পৃথবী জুড়ে, কালক্রমে তা কেটে গেলেও, করোনা ভাইরাস যে এক্কেবারে বিদায় নেবে না এমনটা আগেই বলে রেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার অভিঘাত কমেছে, ঢেউয়ের উচ্চতাও কমেছে ধীরে ধীরে, কিন্তু করোনা ভাইরাস বারবার ফিরছে বিভিন্ন রূপে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যেই কেপি ডট টু-এ আক্রান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। সব থেকে বেশি সংক্রমণ হয়েছে আমেরিকায়।
নতুন কোভিড সংক্রমণ
গত মার্চ মাস থেকে দেশের মধ্যে প্রথম মহারাষ্ট্রে শুরু হয়েছে নতুন কোভিড সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে ৭ দিনে পাঁচ জন করোনা আক্রান্তের খবর মিলেছে কলকাতায়। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ৯ মে আক্রান্ত হয়েছেন এক মহিলা। ১৩ মে আর এক মহিলা করোনা পজিটিভ হন। পরের দিন করোনা ধরা পড়ে এক রোগীর। ১৫ মে করোনা পজিটিভ হন আরও দু'জন। তবে আক্রান্তরা করোনার নতুন উপপ্রজাতি দ্বারা আক্রান্ত কিনা, তা জিনোম সিকোয়েন্সিং না করলে বোঝা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা জানাচ্ছেন, জ্বর, সর্দিকাশি নিয়ে এলে কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে রোগীদের। জানতে চাওয়া হচ্ছে তাঁর ট্রাভেল হিস্ট্রি। চিকিৎসকের মতে, আগের ভ্যারিয়েন্টটাই মিউটেট হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট বেশি ছোঁয়াছে। তবে ভয়টা কম।
কলকাতায় এখনও পর্যন্ত এই নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে ভয়াবহ অসুস্থ হয়েছেন বলে জানা যায়নি। জ্বর, গা-হাত ব্যথার মতো উপসর্গ হচ্ছে । জিনম সিকোয়েন্সিং না হওয়ার দরুণ, বলা যাচ্ছে না নতুন করে করোনা আক্রান্তরা ফ্লার্টে আক্রান্ত কি না।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, আক্রান্তরা সকলেই কলকাতার বাসিন্দা। প্রত্যেকেই অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। রুটিন কোভিড পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তিনজনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দু'জন এখনও চিকিৎসাধীন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, KP ডট টু ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়ন্ট। উপসর্গ বলতে, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, সঙ্গে সর্দি, কাশি গলা ব্যথা, নাক বন্ধ হওয়া, গায়ে ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা, ক্লান্তি ভাব। দ্রুতগতিতে KP ডট টু ছড়ালেও, গুরুতর অসুস্থতার ঘটনা তেমন ঘটছে না।
চিকিৎসক অজয়কৃষ্ণ সরকার জানাচ্ছেন, ' ভাইরাস তো মুছে যায় না। কোভিডের অ্যাক্টিভিটি কখনও বাড়ছে,কখনও কমছে। একটার পর একটা ভ্য়ারিয়েন্ট আসছে। ওমিক্রনের পর থেকে দেখা যাচ্ছে, ছড়াচ্ছে বেশি এমন ভ্যারিয়েন্টই আসছে। তাতে রোগীর অবস্থা ভয়ানক হচ্ছে না, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে না।'
অনেকের উপসর্গ হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো। গলা ব্যথা, সর্দিকাশি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, কয়েকজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অন্য অসুস্থতা নিয়ে তাঁরা হাসপাতালে এসেছিলেন, সেখানে তাঁদের কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সকলেই সুস্থ আছেন। উদ্বেগের পরিস্থিতি নেই।
মহারাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৯১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগই KP ডট টু ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর।